⚖️ মাদক বলতে কি বুঝায়?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 2 weeks ago
  • Category: অপরাধ বিজ্ঞান
মাদক শব্দের অভিধান সম্মত অর্থ হলো মত্ততাদায়ক বা মত্ততা উৎপাদক। সুতরাং মাদকদ্রব্য হলো মত্ততাদায়ক দ্রব্য অর্থাৎ নেশার বস্তু। যে বস্তু সেবনে বা গ্রহণে মত্ততা বা নেশার উদ্রেক হয় তাই মাদকদ্রব্য। মদ হতে এই শব্দটির উৎপত্তি। মাদক শব্দটি বিশেষণ এবং মাদকদ্রব্য হলো বিশেষ্য। 

 

মাদকদ্রব্যের ইংরেজী প্রতি শব্দ হিসেবে Drug কে উল্লেখ করা যায়। যাকে ঔষধ বলা যায়। তবে বিশেষ ঔষধ। অন্যদিকে যে দ্রব্য বা রসায়ন যা শরীরে ক্রিয়া প্রকাশ করে তা বুঝায়। সব ঔষধ শরীরে ক্রিয়া প্রকাশ করে থাকে। তবে আসক্তি জন্মায় না। কিন্তু মাদকদ্রব্য শরীরে প্রবিষ্ট হলে আসক্তি জন্মে। অর্থাৎ একবার শরীর গ্রহণ করলে পরবর্তীতে বা নির্দিষ্ট সময়ে ঐ দ্রব্য গ্রহণের জন্য প্রবল আকাংখার সৃষ্টি হয়। ফলে পুনরায় মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে হয়। এভাবেই আসক্তি বৃদ্ধি পেয়ে প্রবল নেশায় পরিণত হয়। ফলে একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তির মধ্যে নিম্নরূপ বৈশিষ্টের সৃষ্টি হয়।

(ক) মাদকদ্রব্য গ্রহণের প্রবল আকাংখা ও প্রয়োজন হয় এবং যে কোনো উপায়ে সেই দ্রব্য গ্রহণের অদমনীয় প্রচেষ্টা থাকে। 

(খ) মাদকদ্রব্য গ্রহণের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

(গ) মাদকদ্রব্যের উপর মানসিক ও শারীরিক নির্ভরতার সৃষ্টি হয়ে। 

(ঘ) মাদকাসক্ত ব্যক্তির আচরণ ব্যক্তি ও সমাজের প্রতি হুমকীস্বরূপ। 

 

আফিম, গাঁজা, মদ, হেরোইন, কোকেইন, মরফিন, পেথিডিন, মারিজুয়ানা, বিভিন্ন উত্তেজক ও ঘুমের ঔষধ ইত্যাদি যা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ২(২৯)(ক)(খ) ধারার সংজ্ঞা অনুসারে প্রথম তপশিলে উল্লিখিত ক, খ, ও গ শ্রেণীভুক্ত মাদকদ্রব্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলির উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, চাষাবাদ, পরিবহন, ক্রয়, বিক্রয়, ব্যবহার, ব্যবসা, ও রক্ষণাবেক্ষণ উক্ত আইনের ৯ ও ১০ ধারার বিধান লংঘনের জন্য উক্ত আইনের ৩৬ ধারায় অপরধের ধরণ অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির বিধান রয়েছে।  

 

মাদকদ্রব্যের দোকান বন্ধ করার ক্ষমতাঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ১৯ ধারা অনুসারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট অথবা পুলিশ কমিশনার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, তার অধীন কোনো এলাকায় আইন শৃংখলা রক্ষার্থে কোনো মাদকদ্রব্যের দোকান বা পানশালা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা প্রয়োজন, তাহলে তিনি লিখিত আদেশ দ্বারা অনধিক ৩০ (ত্রিশ) দিনের জন্য উক্ত দোকান বা পানশালা বন্ধ করতে পারেন। বিশেষ জরুরী অবস্থায় মহাপরিচালকের পূর্বানুমোদনক্রমে এই মেয়াদ আরও ৩০ (ত্রিশ) দিন পর্যন্ত বর্ধিত করতে পারবেন। 

 

বিনা পরোয়ানায় তল্লাশী ও গ্রেফতার করার ক্ষমতাঃ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৮ এর ২৩ ধারা মোতাবেক মহাপরিচালক অথবা তার নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো অফিসার অথবা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর অথাবা তদুর্ধ্ব কোনো অফিসার অথবা কাস্টমের পরিদর্শক অথবা তদুর্ধ্ব কোনো অফিসার অথবা বিজিবির ল্যান্স নায়েক অথবা তদুর্ধ্ব কোনো অফিসার অথবা কোস্টগার্ড বাহিনীর পেটি অফিসার অথবা তদুর্ধ্ব কোনো অফিসার যদি বিশ্বাস করেন যে কোনো স্থানে মাদকদ্রব্য রয়েছে, তাহলে উল্লিখিত অফিসারগণ বিনা পরোয়ানায় উক্ত স্থানে প্রবেশ করে মাদকদ্রব্য আটক করেতে পারবেন। কোনো ব্যক্তির দেহ তল্লাশী করতে পারবেন। কোনো ব্যক্তি মাদকদ্রব্য অপরাধ করেছে মর্মে সন্দেহ হলে তাকে গ্রেফতার করতে পারবেন। তল্লাশী কাজে বাধাপ্রাপ্ত হলে কিংবা অপসারণের জন্য দরজা-জানালা ভাঙ্গাসহ যেকোনো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। 
Google News Google News
Google News এ বিরাট বাজারের সকল পোস্ট পেতে ক্লিক করে ফিডটি ফলো করুন