⚖️ পুলিশের নিকট প্রদত্ত জবানবন্দী আদালতে গ্রহণযোগ্য কিনা?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 1 day ago
- Category: সাক্ষ্য আইন
তদন্তকারী পুলিশ অফিসার তাহার তদন্তকালে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬০ ধারার বিধান মোতাবেক যে কোনো সাক্ষীকে ডাকিয়া তাহার জবানবন্দী গ্রহণ করিতে পারেন। পুলিশ অরিসার তখন ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬১ ধারা মোতাবেক উক্ত জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করেন। এইরূপ লিপিবদ্ধকৃত তথা সাক্ষী কর্তৃক প্রদত্ত জবানবন্দী বা উহার যেকোনো অংশ প্রমাণ সাপেক্ষে আদালতে সাক্ষ্য আইনের ১৪৫ ধারার বিধান অনুসারে অপরপক্ষের সাক্ষ্য খণ্ডনের জন্য আদালতে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য হইতে পারে। তাছাড়া সাক্ষ্য আইনের ১৫৭ ধারার বিধান মোতাবেক তদন্তকারী পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত জবানবন্দী পরবর্তীতে আদালতে সাক্ষ্য প্রদানকালে পূর্বের সেই বিবৃতি সাক্ষীর সাক্ষ্যের সমর্থনে প্রমাণ করা যাইতে পারে। অর্থাৎ পূর্বে প্রদত্ত জবানবন্দী বা বিবৃত সাক্ষ্য প্রদানকালে আদালতে সমর্থনমূলক সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য।
কোনো ব্যক্তির মৃত্যুকালীন বিবৃতি পুলিশ অফিসার কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হইলে সেই জবানবন্দীও আদালতে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য (সাক্ষ্য আইনের ৩২(১) ধারা)।
তাছাড়া পুলিশ অফিসারের নিকট প্রদত্ত জবানবন্দীর যে অংশের ভিত্তিতে অপরাধ সংঘটনের সহিত জড়িত কোনো তথ্য বাহির হয় বা আলামত উদ্ধার হয়, সেই সহায়ক তথ্যটি বা আলামত আদালতে সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য ( সাক্ষ্য আইনের ২৭ ধারা)।
কোন কোন দলিল বিশুদ্ধ বলিয়া গণ্য?
(১) সাক্ষ্য আইনের ৭৯ ধারা মোতাবেক মূল দলিলের সহিমোহরকৃত নকল।
(২) সাক্ষ্য আইনের ৮০ ধারামতে বিচার কার্যক্রমে সাক্ষীর প্রদত্ত জবানবন্দী এবং আইন অনুসারে গৃহীত অভিযুক্ত ব্যক্তির দোষ স্বীকারোক্তি।
(৩) সাক্ষ্য আইনের ৮২ ধারা মোতাবেক যেসকল দলিল ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডে গৃহীত হইয়াছে, সেইগুলি বাংলাদেশেও গৃহীত এবং বিশুদ্ধ দলিল।
(৪) সাক্ষ্য আইনের ৮৩ ধারা মোতাবেক সরকারের কর্তৃত্বাধীনে সরকারী উদ্দেশ্যে প্রস্তুতকৃত মানচিত্র এবং নকশা।
(৫) সাক্ষ্য আইনের ৮৪ ধারা মোতাবেক যেকোনো দেশের আইনের পুস্তক এবং আদালতের নজির সরকারী নিয়ন্ত্রণে প্রকাশিত হইলে তাহা বিশুদ্ধ দলিল হিসাবে গণ্য।
(৬) সাক্ষ্য আইনের ৮৫ ধারা মোতেবাকে যথোপযুক্ত কর্মকর্তা বা সরকারী প্রতিনিধির সাক্ষাতে সম্পাদিত এবং সত্যায়িত মোক্তারনামা।
(৭) সাক্ষ্য আইনের ৮৬ ধারার বিধানমতে বিদেশী বিচার বিষয়ক রেকর্ডের জাবেদা নকল।
(৮) সাক্ষ্য আইনের ৮৭ ধারামতে গণস্বার্থক বিষয়ে তথ্যের জন্য আদালতের সম্মুখে প্রকাশিত পুস্তক, প্রাসঙ্গিক মানচিত্র বা তালিকা।
(৯) সাক্ষ্য আইনের ৮৮ ধারা মোতাবেক সরকারী টেলিগ্রাফ অফিসের মাধ্যমে প্রেরিত বার্তা।
(১০) সাক্ষ্য আইনের ৯৯ ধারায় তলবমতে বিরোধীপক্ষ দলিল আদালতে হাজির না করিলে আদালত দলিলের সম্পাদন মানিয়া নিবেন। তাহা বিশুদ্ধ হিসাবে গণ্য।
(১১) সাক্ষ্য আইনের ৯০ ধারা মোতাবেক ৩০ বৎসরের পুরাতন দলিল, যাহা উপযুক্ত হেফাজতে থাকে।
(১২) সাক্ষ্য আইনের ৯১ ধারা মোতাবেক কোনো সরকারী কর্মচারীর নিয়োগপত্র এবং বাংলাদেশে যেসকল উইলের প্রবেট স্বীকৃত হইয়াছে।