⚖️ এজাহারে সাধারণত কি কি ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হয়?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 1 week ago
- Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
কোনো মামলার এজাহার তথা আমলযোগ্য অপরাধের প্রাথমিক তথ্য বিবরণী খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এজাহার স্বতন্ত্র সাক্ষ্য নহে। একটি এজাহার কোন মামলার ভিত্তিমূল হিসাবে বিবেচ্য। তাই এজাহারে কোনোরূপ ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকা উচিৎ নহে। এজাহারে সাধারণত কি কি ধরণের ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকিতে পারে, তাহা নিম্নে উল্লেখ করা হইল।
(১) বাংলা ও ইংরেজি তারিখ, উভয় সন এবং সময় লিখা হয় না।
(২) এজাহারের বক্তব্য অনুসারে মামলার ধারা ও উহার সক্ষিপ্ত বিবরণ যথাযথভাবে লিখা হয় না। চোরাই মালের মূল্য তালিকা এবং সনাক্তকরণ চিহ্ন সঠিকভাবে লিখা হয় না।
(৩) মামলা রেকর্ডিং অফিসারের পুরা নাম ও পদবী লিখা হয় না।
(৪) আইনের নির্দেশ থাকিলেও মৌখিক এজাহারের পরিবর্তে লিখিত এজাহার গ্রহণ করা হয়।
(৫) যাহার মাধ্যমে থানায় এজাহার গ্রহণ করা হয়, তাহার নাম ঠিকানা না লিখা।
(৬) সন্দিগ্ধ আসামীর নাম এজাহারের কলামে লিখা।
(৭) একাধিক ঘটনায় একটি মাত্র এজাহার মোতাবেক মামলা রেকর্ড করা।
(৮) কোন আসামী কি অপরাধ করিয়াছে, তাহা সুনির্দিষ্টভাবে এজাহারে উল্লেখ না থাকা।
(৯) কোন কোন সাক্ষী অপরাধ সংঘটন হইতে দেখিয়াছে বা কোন কোন সাক্ষী ঘটনার কোন কোন অংশ দেখিয়াছে, তাহা এজাহারে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ না থাকা।
(১০) ডাকযোগে প্রাপ্ত দরখাস্ত যথাযথ যাচাই না করিয়া এজাহার গ্রহণ করা।
(১১) লিখিত এজাহারে লেখকের নাম-ঠিকান উল্লেখ না থাকা এবং মৌখিক এজাহারে স্বাক্ষর না করা।
(১২) এজাহারের ভাষা না বোধক হওয়া।
(১৩) সংবাদদাতার লিখিত এজাহারে তাহার টিপসহি সত্যায়িত না করা।
(১৪) বিলম্বে এজাহার দায়েরের কারণ এজাহারে উল্লেখ না থাকা।
(১৫) এজাহারের কলামে ইউ পি নম্বর ও মৌজা নম্বর-এর সাথে নাম উল্লেখ না করা।
(১৬) যে সমস্ত মামলা কোনো উর্ধ্বতন অফিসার তদারকি করিবেন, সেই মামলার এজাহার রেকর্ড করার সময় কলামের উপরে ঘটনাস্থলে গমনাগমনের পথ বা রাস্তা উল্লেখ করা হয় না।
(১৭) এজাহারে অপরাধ প্রক্রিয়া (Modus operandi) উল্লেখ করা হয় না।
(১৮) ঘটনাস্থলে অপরাধীর আগমন ও প্রত্যাগমন সম্পর্কে কিছু লিখা হয় না।
(১৯) এজাহারে গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয় বাদ পড়া।
(২০) যথেষ্ট সতর্কতার সহিত এজাহার রেকর্ড করা হয় না।
(২১) ঘটনার সময় ঘটানাস্থলে আলো ছিলো কিনা তাহা উল্লেখ না করা।
(২২) ঘটনায় ব্যবহৃত অস্ত্র সম্পর্কে কিছু উল্লেখ না থাকা।
(২৩) অপরাধের উদ্দেশ্য বা কারণ লিখা হয় না।
এজাহারের ঘটনা মিথ্যা বলিয়া তদন্তকালে প্রমাণিত হইলে, তদন্তকারী অফিসার ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৩ ধারার বিধান মতে কোর্টে চুড়ান্ত রিপোর্ট মিথ্যা দাখিল করিয়া এজাহারকারীর বিরুদ্ধে ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক Non-FIR প্রসিকিউশন দাখিল করিলে এজাহারকারীর বিচার হইবে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ২১১ ধারা মোতাবেক এবং মামলাটি যদি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হয় তাহা হইলে এজাহারকারীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১৭ ধারা মোতাবেক বিচার হইবে।