⚖️ আসামী ও সাক্ষীকে আদালতে হাজির হতে বাধ্য করার পদ্ধতি কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 2 weeks ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
আসামী ও সাক্ষীকে আদালতে হাজির হতে বাধ্য করার জন্য আদালত কর্তৃক সমন, গ্রেফতারী পরোয়ানা, হুলিয়া, ক্রোকী পরোয়ানা ইত্যাদি ইস্যু করা হয়। ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৮ ধারা হতে ৭৪ ধারায় সমন জারীর পদ্ধতি এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৫ ধারা হতে ৮৬ ধারায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে। হুলিয়া কার্যকরী করার পদ্ধতি ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারায় এবং ক্রোকী পরোয়ানা কার্যকরী করার পদ্ধতি ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ ধারায় বর্ণিত আছে। 

 

(ক) সমনঃ 

(১) ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৮ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোনো আদালত সমন প্রদান করলে লিখিতভাবে প্রতিলিপিসহ দিতে হবে এবং তা বিচারকের স্বাক্ষর ও সীল মোহরযুক্ত হবে। সমন কোনো পুলিশ কর্মকর্তা দ্বারা বা সরকার প্রণীত বিধি সাপেক্ষে সমন প্রদানকারী আদালতের কর্মকর্তার দ্বারা বা অন্য কোনো সরকারী কর্মচারী কর্তৃক জারী করতে হবে। 

 

(২) সমন জারীর পদ্ধতিঃ 

ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৯ ধারায় সমন জারীর পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে যা নিম্নে উল্লেখ করা হলো-  

(ক) যাকে সমন দেয়া হবে সমনের দুই কপির মধ্যে একটি তাকে প্রদান করে ব্যক্তিগতভাবে সমন জারী করতে হবে। 

(খ) যার উপর সমন জারী করা হবে তারা প্রত্যেকে সমনের প্রতিলিপির পিছনের পৃষ্ঠায় প্রাপ্তি স্বীকারের সই করবেন। 

(গ) কোনো কোম্পানী অথবা সমিতিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের উপর সমন জারী করতে হলে তা উক্ত প্রতিষ্ঠানের সচিব, ব্যবস্থাপক অথবা অন্য কোনো প্রধান অফিসারের উপর জারী করতে হবে অথবা ডাকযোগে রেজিষ্ট্রিকৃত পত্র দ্বারা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করে জারী করতে হবে। 

 

(৩) প্রাপককে না পাওয়ার ক্ষেত্রে সমন জারীর পদ্ধতি (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭০ ধারা)। 

যথাসাধ্য চেষ্টা করেও যদি সমনের প্রাপক বা গ্রহীতাকে না পাওয়া যায় তাহলে সমন প্রাপক পরিবারের কোনো সাবালক পুরুষ সদস্যের নিকট সমনের এককপি প্রদান করে সমন জারী করবেন। 

 

(৪) সমন লটকিয়ে জারীকরণঃ 

যদি ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৯ এবং ৭০ ধারা অনুযায়ী যথার্থভাবে চেষ্টা করা সত্ত্বেও সমন জারী করা সম্ভব না হয় তাহলে যে ব্যক্তির উপর সমন জারী করা হবে তিনি সচরাচর যেস্থানে বাস করেন জারীকারক সে বাড়ি অথবা বাসস্থানের একটি প্রকাশ্য স্থানে সমনের একটি প্রতিলিপি লটকিয়ে জারী করবেন। 

 

(৫) প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর উপর সমনজারী (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭২ ধারা)। 

যে ব্যক্তির উপর সমন জারী করা হবে তিনি যদি প্রজাতন্ত্রের সক্রিয় চাকুরীতে নিযুক্ত থাকেন, তখন সমন প্রাদনকারী আদালত উক্ত ব্যক্তি যে অফিসে কর্মরত আছেন উহার প্রধান কর্মকর্তার নিকট দুই কপি সমন প্রেরণ করবেন এবং উক্ত কর্মকর্তা অতঃপর ফৌজদারী কার্যবিধির ৬৯ ধারায় বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে সমন জারী করবেন। 

 

(৬) স্থানীয় সীমার বাহিরে সমন জারী (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৩ ধারা)। 

আদালতের স্থানীয় অধিক্ষেত্র বহির্ভূত স্থানে সমন জারীর ক্ষেত্রে যে ব্যক্তির উপর সমন জারী হবে সে ব্যক্তি যে ম্যাজিষ্ট্রেটের এখতিয়ারভুক্ত এলাকায় রয়েছেন বা বাস করেন, উক্ত আদালত দুই কপি সমন জারীর জন্য সে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন। 

 

(খ) গ্রেফতারী পরোয়ানা (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৫ ধারা)।

(১) গ্রেফতারী পরোয়ানার উপাদানঃ  একটি গ্রেফতারী পরোয়ানায় নিম্নে বর্ণিত উপাদান সমূহ অবশ্যই থাকতে হবে= 

(ক) পরোয়ানাটি লিখিত হতে হবে। 

(খ) পরোয়ানা যিনি জারী করবেন তার নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে। 

(গ) অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা থাকতে হবে। 

(ঘ) অপরাধের বিবরণ থাকতে হবে।

(ঙ) ইহা প্রিজাইডিং অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে। 

(চ) ইহা আদালতের সীলমোহর যুক্ত হতে হবে। 

প্রত্যেকটি গ্রেফতারতী পরোয়ানা প্রদানকারী আদালত কর্তৃক বাতিল না করা পর্যন্ত বা তা জারী না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। 

(২) আদালত কর্তৃক জামানত গ্রহণের নির্দেশ (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৬ ধারা)। 

কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা প্রদানকালে আদালত মনে করলে পরোয়ানার উপর লিখিতভাবে এ মর্মে নির্দেশ দিতে পারেন যে, উক্ত ব্যক্তি নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে হাজির হবেন বলে যদি উপযুক্ত জামিনদারসহ একটি মুচলেকা সম্পাদন করে তাহলে পরোয়ানা প্রয়োগকারী কর্মকর্তা উক্ত মুচলেকা গ্রহণ পূর্বক উক্ত ব্যক্তিকে হেফাজত হতে মুক্তি দিবেন। 

 

(৩) গ্রেফতারী পরোয়ানা কার নিকট নির্দেশিত হবে (ফৌজদারী কার্যবিধির ৭৭ ধারা)। 

গ্রেফতারী পরোয়ানা সাধরণত এক বা একাধিক পুলিশ কর্মকর্তার উপর নির্দেশিত হবে এবং মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক প্রদত্ত হলে সর্বদাই তদ্রুপ নির্দেশিত হবে। 

 

(৪) অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা দেখার অধিকার (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮০ ধারা)। 

যে পুলিশ কর্মকর্তা বা অন্য কোনো ব্যক্তি যিনি গ্রেফতারী পরোয়ানা কার্যকরী করবেন, তিনি যাকে গ্রেফতার করা হবে তাকে গ্রেফতারী পরোয়ানার সারমর্ম জ্ঞাত করাবেন এবং প্রয়োজনবোধে তাকে গ্রেফতারী পরোয়ানাটি দেখাবেন। 

 

(৫) এখতিয়ার বহির্ভূত এলাকায় গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর পদ্ধতি ( ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৩ ধারা)। 

যখন কোনো গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রদানকারী আদালত স্থানীয় এখতিয়ারের বাহিরে কার্যকর করার প্রয়োজন হয় তখন উক্ত আদালত গ্রেফতারী পরোয়ানাটি কোনো পুলিশ কর্মকর্তার উপর নির্দেশিত না করে যে ম্যাজিষ্ট্রেট বা পুলিশ সুপার অথবা পুলিশ কমিশনারের (মেট্রোপলিটন এলাকায়) এখতিয়ারের স্থানীয় সীমারেখার মধ্যে উহা কর্যকরী করতে হবে তার নিকট ডাকযোগে বা অন্যভাবে প্রেরণ করবেন। যে ম্যাজিষ্ট্রেট বা পুলিশ সুপার অথবা পুলিশ কমিশনার উক্তরূপে পরোয়ানা প্রাপ্ত হবেন তিনি উহার উপর নিজের নাম সই করবেন এবং কার্যকরী করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। 

গ্রেফতারকৃত আসামীকে তার কৌশুলী ও আত্মীয় স্বজনের সাথে আলাপের সুযোগ দিতে হবে। যেক্ষেত্রে আসামীকে কোনো ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়নি এবং তার কোনো আত্মীয়কে তার সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি এবং যেক্ষেত্রে আসামী জানেনা তার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ সেক্ষেত্রে তাকে কোনো ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে এমন জায়গায় হাজির করা হলো যেখানে সে সহায়হীন এবং পৃথিবী হতে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন। উহা প্রকৃত পক্ষে বিচার পদ্ধতির প্রতি বিদ্রুপের সামিল (পিএলডি ১৯৬৯ লাহোর ১০২০)। 

 

(গ) হুলিয়া (Proclamation):

ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ ধারায় পলাতক আসামীর বিরুদ্ধে হুলিয়া ইস্যু ও জারীর পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে। যদি কোনো আদালতের এরূপ বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, উক্ত আদালত যার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রদান করেছে সে ব্যক্তি পলাতক হয়েছে বা পরোয়ানা যাতে কার্যকরী না হতে পারে তজ্জন্য আত্মগোপন করেছে তখন উক্ত আদালত তাকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে ঘোষণা প্রকাশের তারিখ হতে ৩০ (ত্রিশ) দিনের কম নহে সময়ের মধ্যে উক্ত ব্যক্তিকে হাজির হবার জন্য একটি লিখিত ঘোষণা প্রকাশ করতে পারেন। ঘোষণাটি নিম্নে বর্ণিত রূপে প্রকাশ করতে হবে। 

(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তি যে স্থানে বাস করেন উহার প্রকাশ্য স্থানে পড়ে শুনাতে হবে।  

(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি বসবাসের আশেপাশের স্থানে উহা প্রকাশ্যে লটকিয়ে দিতে হবে। 

(গ) উহার একটি কপি আদালত ভবনের কোনো প্রকাশ্য স্থানে লটকিয়ে দিতে হবে। 

ঘোষণা প্রদানকারী আদালত যদি এ মর্মে একটি লিখিত বিবৃতি দেন যে, ঘোষণাটি একটি নির্দিষ্ট দিনে যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়েছে তবে তা অত্র ধারার প্রয়োজনীয় শর্তাবলী পালন ও নির্দিষ্ট দিনে প্রকাশ করা হয়েছে মর্মে চুড়ান্ত প্রমাণ বলে গণ্য হবে। 

 

(ঘ) ক্রোকী পরোয়ানা (Attachment):

ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮ ধারায় পলাতক আসামীর সম্পত্তি ক্রোকের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। উক্ত ধারা অনুসারে ঘোষণা প্রদানকারী আদালত যে কোনো সময় ঘোষিত ব্যক্তির অস্থাবর বা স্থাবর উভয় প্রকারের যে কোনো সম্পত্তি ক্রোক করার আদেশ দিতে পারেন। 

(১) অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ক্রোক পদ্ধতি (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮(৩) ধারা)। 

যদি ক্রোককৃত সম্পত্তি ঋণ বা অস্থাবর হয় তবে তা জব্দ করে বা তত্বাবধায়ক (Receiver) নিযুক্ত করে অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর লিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ক্রোক করা যাবে। 

(২) স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ক্রোক পদ্ধতি (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮(৪) ধারা)। 

যে সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দেয়া হয়েছে তা স্থাবর হলে দখল করে বা তত্বাবধায়ক (Receiver) নিযুক্ত করে বা লিখিত আদেশ দ্বারা সম্পত্তি হস্তান্তর নিষিদ্ধ করে ক্রোক করা যাবে। 

(৩) ক্রোককৃত পচনশীল দ্রব্য বিক্রয়ের ক্ষমতা (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮(৫) ধারা)। 

ক্রোককৃত সম্পত্তি যদি গৃহপালিত পশু বা পচনশীল প্রকৃতির হয় তাহলে প্রয়োজন মনে করলে তা অবিলম্বে বিক্রয়ের আদেশ দিতে পারেন এবং বিক্রয়লব্দ অর্থ আদালতের নির্দেশ অনুসারে নির্দিষ্ট খাতে জমা হবে। 

(৪) ঘোষিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কেহ কর্তৃক ক্রোককৃত সম্পত্তি দাবী (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮(৬ক) ধারা)। 

অত্র ধারা মোতাবেক কোনো সম্পত্তি ক্রোকের তারিখ হতে ৬ (ছয়) মাসের মধ্যে ঘোষিত ব্যক্তি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি যদি ক্রোকাবদ্ধ কোনো সম্পত্তি দাবী করে বা ক্রোকের বিরুদ্ধে আপত্তি উত্থাপন করে যে, উক্ত সম্পত্তিতে তার স্বার্থ আছে তাহলে অনুরূপ দাবী অথবা আপত্তি সম্পর্কে তদন্ত করতে হবে এবং উহা সম্পূর্ণ বা আংশিক মঞ্জুর বা খারিজ করা যেতে পারে। 

(৫) ঘোষিত ব্যক্তি হাজির হলে সম্পত্তি ক্রোকামুক্ত (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৮(৬ঙ) ধারা)। 

ঘোষিত ব্যক্তি যদি ঘোষণার প্রদত্ত সময়ের মধ্যে হাজির হয় তাহলে আদালত আদেশ দ্বারা সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি ক্রোক হতে মুক্ত করে দিবেন। 

(৬) ক্রোকী সম্পত্তি সরকারের অধীনে ন্যাস্ত (ফৌজদারী কার্যবিধির ৮৭ (৭) ধারা)। 

ঘোষিত ব্যক্তি যদি ঘোষণায় উল্লিখিত সময়ের মধ্যে আদালতে হাজির না হন তাহলে ক্রোককৃত সম্পত্তি সরকারের এখতিয়ারভুক্ত হবে। তবে ক্রোকের তারিখ হতে ৬ (ছয়) মাস অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ক্রোককৃত সম্পত্তি বিক্রয় করা যাবে না। 

পলাতক আসামীর ব্যক্তিগতভাবে সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের আবেদন প্রয়োজন নেই। তারপক্ষে অন্য কেউ আবেদন করলেও চলবে। তবে সে আদালতে হাজির হয়ে প্রমাণ করবে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য সে পলায়ন করেনি এবং ক্রোক সম্পর্কে তার কোনো কিছু জানা ছিলো না (১৩ ডিএলআর ৭৩৮)। 

 

(ঙ) অগ্রিম হুলিয়া ও ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যুঃ 

অনেক ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের সাথে সাথে পুলিশ আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং একই সাথে হুলিয়া ও ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যু করার জন্য আবেদন করলে নিম্ন আদালত তা ইস্যু করার আদেশ প্রদান করে। কিন্তু এ আদেশ সম্পূর্ণ বে-আইনী। কারণ মামলা দায়েরের পর পুলিশ তা তদন্ত করেন এবং মামলার বিষয়বস্তু তদন্তে প্রমাণিত হলে পুলিশ আদালতে চার্জশীট এবং মামলা প্রমাণিত না হলে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। চার্জশীট দাখিলের পর আদালত সন্তুষ্ট হলে তা গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেন। যদি পরবর্তীতে আদালতের বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে, আদালত যার বিরুদ্ধে পরোয়ানা প্রদান করেছে সে পলাতক হয়েছে বা পরোয়ানা যাতে কার্যকরী না হতে পারে সেজন্য আত্মগোপন করেছে তবে সেক্ষেত্রে আদালত হুলিয়া ও ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যু করতে পারে। আদালত কোনো ক্ষেত্রে সন্তুষ্ট হলে গ্রেফতারী পরোয়ানা, হুলিয়া ও ক্রোকী পরোয়ানা একই সাথে ইস্যু করতে পারে। কিন্তু পুলিশ কর্তৃক চার্জশীট দাখিল এবং আদালত তা গ্রহণ না করা পর্যন্ত কোনো আসামীর বিরুদ্ধে অগ্রিম গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যু করা যাবে না। কোনো মামলার তদন্তের সময় কোনো তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করেন যে, মামলার তদন্তের স্বার্থে কোনো আসামীকে গ্রেফতার করা প্রয়োজন তাহলে আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ আদালতের আদেশ ব্যতিরেকেই আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেন। চার্জশীট দাখিল ও আদালত কর্তৃক তা গ্রহণের পূর্বে আদালত কোনো আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা এবং ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যু করলে তা সম্পূর্ণ বে-আইনী হবে। 

 

(চ) সাক্ষীর প্রতি পরোয়ানা (Witness Warrant)।

সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে বিচার হতে পারে না। তাই সাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রদানে বাধ্য করার জন্য নিম্ন বর্ণিত পদক্ষেপ সমূহ গ্রহণ করা যায়। 

(১) প্রথমে সাক্ষীর প্রতি সমন দিতে হবে। 

(২) সমন জারী হবার পরও যদি সাক্ষী হাজির না হয় তখন জামিনযোগ্য গ্রেফতারী পরোয়ানা ইস্যু করতে হবে। 

(৩) সাক্ষী কোনো কারণে আত্মগোপন করলে তাকে হাজির হতে বাধ্য করার জন্য হুলিয়া এবং ক্রোকী পরোয়ানা ইস্যু করা যাবে। 

ফৌজদারী কার্যবিধির ১৭১ (২) ধারায় বর্ণিত হয়েছে যে, ফরিয়াদী অথবা সাক্ষীকে আদালতে হাজির নিশ্চিত করার দায়িত্ব পুলিশ অফিসারের উপর বর্তাবে। 

Google News Google News
Google News এ বিরাট বাজারের সকল পোস্ট পেতে ক্লিক করে ফিডটি ফলো করুন