⚖️ পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা হইলে রক্ষা পাওয়ার উপায়

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 2 weeks ago
  • Category: পিআরবি

কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা হইলে নিম্নলিখিত বিধি বিধান মোতাবেক আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিতে পারিবেন। 


(১) পিআরবি ৯৮: এই প্রবিধান মোতাবেক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দেওয়ানী মামলা রুজু করা যাইবে না। তবে পুলিশ সুপার অভিযোগটি সম্পর্কে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও ডিআইজি এর মাধ্যমে মহা-পুলিশ পরিদর্শককে একটি রিপোর্ট পাঠাইতে পারেন। 

 

(২) পিআরবি ৯৯: এই প্রবিধার অনুসারে সরকারের কাছে যখন প্রতীয়মান হয় যে, কোনো পুলিশ অফিসার আইনসঙ্গত দয়িত্ব পালনকালে সরল বিশ্বাসের বশবতী হইয়া কোনো কাজ করিয়াছেন এবং তিনি দেওয়ানী বা ফৌজদারী মামলায় জড়িত হইয়াছেন, তখন উক্ত পুলিশ অফিসারকে রক্ষা করিবার জন্য সরকার নিজ দায়িত্ব স্বীকার করিয়া নেন। অর্থাৎ এই প্রবিধানে দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা হইতে পুলিশ অফিসারের রক্ষার ব্যবস্থা বিবৃত হইয়াছে। সরকারি অনুমোদন ছাড়া ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯৭ ধারা মতেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করার বিধান রহিয়াছে। এই প্রবিধান মোতাবেক পুলিশ অফিসারগণ উল্লিখিত অধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাইয়া থাকেন। 

 

(৩) পিআরবি ১০১: এই প্রবিধান মোতাবেক সরকারি দায়িত্ব পালনকালে কোনো পুলিশ অফিসারের কৃত কার্যের জন্য-


(ক) ১৯০৮ সালের দেওয়ানী আইনের ৮০ ধারার অধীনে প্রয়োজনীয় নোটিশ ছাড়া কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা হইলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার উক্ত আইনের ৮০ ধারার বিধানের পরিপন্থিভাবে মামলা দায়ের হওয়ায় উহা খারিজের জন্য আদালতে আবেদন করিতে পারেন এবং প্রতিকার পাইতে পারেন। পুলিশ অফিসার বিষয়টি পিআরবি ১০০ বিধির বিধানমতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে এবং সরকারি ব্যয়ে মামলা পরিচালনার প্রস্তাব দিতে পারেন। সরকারি অনুমোদনে মামলাটি আপোষ-মীমাংসারও ব্যবস্থা নিতে পারেন। পুলিশ অফিসার সরকারী উকিলের সহায়তা পাইবেন।  

 

(খ) ফৌজদারী মামলার ক্ষেত্রে সাহায়তার জন্য ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৯৭ ধারার আওতা বহির্ভুত পুলিশ অফিসারগণ পুলিশ আইন, ১৮৬১ এর ৪২ ধারার সূযোগ পাইবেন। যে সকল পুলিশ অফিসার ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৯৭ ধারার আওতায় সহায়তা পাওয়ার যোগ্য তাহারা সরকারের নির্দেশ পাওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় পাইবেন এবং উহা সংশ্লিষ্ট অফিসারের আত্মপক্ষ সমর্থনের সহায়ক হইবে। কিন্তু যে সকল পুলিশ অফিসারের মামলা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৯৭ ধারার সুবিধা লাভের যোগ্য নহে, সেই বিষয়ে পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সহিত আলোচনা করিয়া ব্যবস্থা নিবেন। পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু ও পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করিবেন কি না, তাহা সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেকই পরিচালিত হইবে। 

 

(৪) পিআরবি ১০২: এই প্রবিধান মোতাবেক যে সকল পুলিশ অফিসার আইনসঙ্গত সরকারি দায়িত্ব  পালন করিতে গিয়া মামলায় জড়াইয়াছেন, সেই সকল পুলিশ অফিসার সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটরের সহায়তা পাইবেন। উক্ত সহায়তা সরকারি খরচে বা নিজস্ব খরচে নির্বাহ হইতে পারে। বিভাগীয় প্রধান লিগ্যাল রিমেমব্রান্সারের মাধ্যমে সরকারি অনুমোদন প্রার্থনা করিয়া থাকেন। তবে সরকারি উকিল (পিপি) তাহার নির্ধারিত ফিস অবশ্যই প্রাপ্ত হইবেন। 

 

পুলিশ আইন ১৮৬১ এর ৪২ এবং ৪৩ ধারাতেও পুলিশ অফিসারের আত্মরক্ষামূলক ব্যবস্থা রহিয়াছে। যেমন-


(১) পুলিশ আইনের ৪২ ধারাঃ এই ধারা অনুসারে কোনো অপরাধের জন্য কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ঘটনার তিনমাস সময়ের পর আর কোনো মামলা দায়ের করা যাইবে না। তাছাড়া মামলা দায়েরের অন্তত একমাস পূর্বে সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার অথবা পুলিশ সুপার অথবা সহকারী পুলিশ সুপারকে নোটিশ পাঠাইতে হইবে। অবশ্য কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এইরূপ বিধানে মামলা রুজু হইলে তাহার বিরুদ্ধে আর কোনো দেওয়ানী মামলা দায়ের করা চলিবে না (পিআরবি ৯৮ এবং ১০১(৪)। 

 

(২) পুলিশ আইনের ৪৩ ধারাঃ এই ধারার বিধান মোতাবেক কোনো বিশেষ কাজের দরুণ কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের কিংবা কোনো কাজের নিমিত্তে কোনো পুলিশ অফিসারের নামে মামলা হইলেও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ বলে কাজ করিয়াছেন মর্মে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাইবেন এবং উক্ত ডিফেন্স প্রমাণিত হইলে তাহা আইনে গ্রাহ্য হইবে (পিআরবি ৯৯ বিধি)।