⚖️ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 1 week ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৪(১)(ট) ধারা মোতাবেক তদন্ত (Inquiry) অর্থ কোনো ম্যাজিষ্ট্রেট অথবা আদালত কর্তৃক পরিচালিত বিচার ব্যতীত সকল তদন্ত। ম্যাজিষ্ট্রেট বা আদালত কর্তৃক পরিচালিত তদন্তকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত বলা হয়। 

 

বাদী কর্তৃক দাখিলকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে ম্যাজিষ্ট্রেট বাদীকে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ২০০ ধারা মোতাবেক পরীক্ষা করিয়া যদি মনে করেন যে, অভিযোগের সত্যতা নিরুপণের নিমিত্তে প্রাথমিক তদন্তের প্রয়োজন রহিয়াছে, তাহা হইলে নালিশী দরখাস্তের উপর তিনি নিজে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করিতে পারেন বা অন্য কোনো অধঃস্তন ম্যাজিষ্ট্রেটকে দিয়া বিচার বিভাগীয় তদন্ত করাইতে পারেন। 

 

এজলাসে অথবা তাহার খাস কামড়ায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের কার্যক্রম পরিচালনা করিতে পারেন। তিনি প্রথমে বাদীর এবং তারপর এক এক করিয়া বাদীপক্ষের সাক্ষীদের হলফান্তে জবানবন্দী গ্রহণ করিবেন। মামলায় আনীত অভিযোগের সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য তিনি খুব সতর্ক ও সচেতনতার সাথে সাক্ষীদেরকে পরীক্ষা করিবেন। বিচার বিভাগীয় তদন্তের সময় আসামী বা তাহার কোনো প্রতিনিধি বা তাহার নিয়োজিত কোনো কৌশলী উপস্থিত থাকিতে পারিবেন না। বাদী পক্ষেরও কোনো কৌশলীকে তদন্তের সময় উপস্থিত থাকিবার অনুমতি না দেওয়াই সমীচীন। বাদীকে তাহার অভিযোগের সমর্থনে ডাক্তারী সনদপত্র বা অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক কাগজপত্র তদন্তের সময় দাখিল করার জন্য বলা যাইতে পারে, যাহাতে প্রকৃত ঘটনা সহজেই উদঘাটিত হয়। সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি (যদি থাকে) পর্যায়ক্রমে কোন কোন আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হইয়াছে এবং কে কোন অপরাধ করিয়াছ্বে ইত্যাদি উল্লেখ করিয়া ম্যাজিষ্ট্রেট একটি প্রতিবেদন দাখিল করিবেন। ইহাই বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন নামে অবিহিত। 

 

উচ্চতর আদালতের সিদ্ধান্তসমূহঃ 

(১) শপথের ভিত্তিতে নালিশকারীর জবানবন্দী গ্রহণ না করা পর্যন্ত ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ২০২(১) ধারার অধীনে কোনো নালিশ বিচার বিভাগীয় তদন্ত বা অনুসন্ধানের জন্য প্রেরণ করা যায় না। ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারায় বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ ব্যতিরেকে উক্ত কার্যবিধির ২০২ ধারা অনুযায়ী বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য প্রদত্ত আদেশ আইনের পরিপন্থি হইবে এবং এইরূপ তদন্ত কার্যক্রমও উহার ভিত্তিতে জারীকৃত আদেশ বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে (২৮ ডিএলআর ৩৮৯)।  


(২) বিচার বিভাগীয় তদন্তের ক্ষেত্রে আসামীর উপস্থিত থাকার কোনো অধিকার নাই এবং সাক্ষীদের জেরাও করিতে পারিবেন না (৫ ডিএলআর ১১২)। 

 

(৩) পুলিশ আসামীর বিরুদ্ধে মামলা টিকে না এই মর্মে সুপারিশ সহকারে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করিলেও ম্যাজিষ্ট্রেট বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন এবং তদন্তে মামলার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হইলে ম্যাজিষ্ট্রেট মামলা আমলে নিতে পারেন (২৯ ডিএলআর ২৫)। 


(৪) তদন্তকারী ম্যাজিষ্ট্রেট হলফ গ্রহণসহ কোনো ম্যাজিষ্ট্রেটের সকল ক্ষমতা প্রয়োগ করিতে পারেন (১২ সিআরএল৩২৩)। 


(৫) যাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয় তাহাকে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০২ ধারার অনুসন্ধানে অংশ গ্রহণ করিতে বলার এখতিয়ার ম্যাজিষ্ট্রেটের নাই (৩৫ ডিএলআর ২১৭৬)।