⚖️ সামরিক বাহিনীর সদস্য আসামী হলে অনুসরণীয় পদ্ধতি কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 3 weeks ago
  • Category: পিআরবি
সামরিক বাহিনীর সদস্যরা যখন আসামী হন তখন কি পদ্ধতি অনুসরণ করে অগ্রসর হবেন এ নিয়ে পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেট প্রায়ই সমস্যায় পড়েন। তাই এ দিকটা লক্ষ্য রেখে সামরিক বাহিনীর সদস্য আসামী হলে পদ্ধতিগত বিষয়টি উল্লেখ করা হলো। সামরিক বাহিনীর সদস্য আসামী হলে তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন হচ্ছেঃ-   

(১) বাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্ট ১৯৫২,

(২) ফৌজদারী পদ্ধতি (সামরিক অপরাধী) বিধি ১৯৭০,

(৩) ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪৯ ধারা এবং 

(৪) পিআরবি প্রবিধান ৪৩৮ (পরিশিষ্ট-XXV!!)। 

বাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্ট ১৯৫২ এর ৭৬, ৭৭, ৯৪ এবং ৯৫ ধারার বিধান সমূহ নিম্নে বর্ণিত হলোঃ 

 

বেসামরিক ব্যক্তি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গ্রেফতার (৭৬ ধারা)।   

যখন কোনো ব্যক্তি এ আইনের অধীন কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হয় তখন এখতিয়ারবান ম্যাজিষ্ট্রেট বা পুলিশ অফিসার ঐ ব্যক্তির কমান্ডিং অফিসারের স্বাক্ষরে লিখিত আবেদন পেয়ে এরূপ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে এবং সামরিক হেফাজতে (Military custody) প্রেরণ করবেন। 

 

পলাতক আসামীদের বন্দী করা (৭৭ ধারা)। 

(১) যখন কোনো ব্যক্তি পলায়ন করে তখন পলাতক ব্যক্তির কমান্ডিং অফিসার পলায়ন সম্পর্কিত লিখিত তথ্য এরূপ বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে প্রদান করবেন যিনি পলাতককে বন্দী করতে সহযোগিতা করতে পারবেন। এরূপ কর্তৃপক্ষ পলাতক আসামীকে ধৃত করার জন্য এরূপভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন যেন উক্ত পলাতককে ধৃত করতে ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক পরোয়ানা ইস্যু হয়েছে এবং পলাতক ব্যক্তি ধৃত হলে সামরিক হেফাজতে নিবেন। 

(২) যদি কোনো পুলিশ অফিসারের বিশ্বাস করার যুক্তিসংগত কারণ থাকে যে, কোনো ব্যক্তি পলাতক বা বিনা ছুটিতে অনুপস্থিত তাহলে তাকে বিনাপরোয়ানায় গ্রেফতার করা আইনসংগত হবে এবং আইনানুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য তিনি তাকে অনতিবিলম্বে নিকটবর্তী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট নিবেন। 

 

কোর্ট মার্শাল এবং ফৌজদারী আদালতের সহ অধিক্ষেত্রের ক্ষেত্রে আদেশ (৯৪ ধারা)।  

যখন কোনো বেসামরিক অপরাধের (Civil offence) ক্ষেত্রে ফৌজদারী আদালত এবং কোর্ট মার্শালের সহ-অধিক্ষেত্র (Concurrent Jurisdiction) থাকে তখন কোন আদালতে প্রসিডিং শুরু হবে এ ব্যাপারে প্রেসক্রাইবড অফিসারের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব থাকবে এবং যদি ঐ অফিসার সিদ্ধান্ত নেন যে প্রসিডিং কোন কোর্ট মার্শালে শুরু হবে তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সামরিক হেফাজতে অন্তরীন রাখার নির্দেশ দিবেন। 

 

অপরাধীকে হস্তান্তর করতে ফৌজদারী আদালতের ক্ষমতা (৯৫ ধারা)। 

(১) যেক্ষেত্রে কোনো ফৌজদারী আদালত কোনো বেসামরিক অপরাধের (Civil offence) প্রসিডিং তার আদালতে গৃহীত হওয়া উচিৎ মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন সেক্ষত্রে তিনি প্রেসক্রাইবড অফিসারকে লিখিত নোটিশের মাধমে হয় নিকটবর্তী ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট আইন অনুসারে প্রসিডিং গ্রহণ করার জন্য অপরাধীকে হস্তান্তর করতে অথবা সরকারের নিকট সিদ্ধান্তের জন্য কোনো রেফারেন্স পেন্ডিং থাকলে প্রসিডিং স্থগিত করার আদেশ প্রদান করতে পারেন। 

(২) এরূপ প্রত্যেক ক্ষেত্রে বর্ণিত অফিসার অধিনায়ককে (Requisition) প্রতিপালন করে হয় অপরাধীকে হস্তান্তর করবেন অথবা কোন আদালতে প্রসিডিং শুরু হবে তা নির্ধারণের জন্য তাৎক্ষণাৎ সরকারের নিকট প্রেরণ করবেন এবং এরূপ রেফারেন্সের উপর আদেশ চুড়ান্ত বলে গণ্য হবে। 

সংজ্ঞা 

(২) বেসামরিক অপরাধ (Civil offence) বলতে বাংলাদেশে সংঘটিত এবং ফৌজদারী আদালত কর্তৃক বিচার্য কোনো অপরাধকে বুঝাবে। 

(৩) “কোর্ট মার্শাল” বলবে এ আইনের অধীন অনুষ্ঠিত কোর্ট মার্শালকে বুঝাবে। 

(৪) “ফৌজদারী আদালত” (Criminal Court) বলতে বাংলাদেশে ফৌজদারী বিচারের আদালতকে অথবা সরকার কর্তৃক অন্যত্র প্রতিষ্ঠিত কোনো আদালতকে বুঝাবে। 

 

ফৌজদারী পদ্ধতি (সামরিক অপরাধীদের) বিধি ১৯৭০ এর ২-৭ বিধি সমূহ নিম্নে বর্ণিত হলোঃ 

বিধি-২ 

যখন কোনো ব্যক্তিকে সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী আইনে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট আনা হয় এবং বাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্ট ১৯৫২, বাংলাদেশ নৌবাহিনী অধ্যাদেশ ১৯৬১ বা বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আইন ১৯৫৩ এর অধীন অভিযুক্ত হওয়ায় কোর্ট মার্শাল কর্তৃক তার বিচার হবে এবং এরূপ ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট উপযুক্ত সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষের দ্বারা উত্থাপিত না হলে, ফৌজদারী কার্যবিধি অনুসারে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে এবং এরূপ গ্রহণের পূর্বে এরূপ কর্তৃপক্ষকে নোটিশ প্রদান করবে এবং এরূপ নোটিশ জারী হওয়ার পর হতে ১৫ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত-

(ক) ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪৩ ধারায় দন্ডিত করা, ২৪৭ বা ২৪৮ ধারায় খালাস অথবা ২৪৪ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থনের ব্যাপারে তাকে শুনা যাবে না,

(খ) ফৌজদারী কার্যবিধির ২৪১ ধারায় অভিযোগ গঠন করা যাবে না।

(গ) হাইকোর্ট অথবা দায়রা আদালতে বিচারের জন্য ২১৩ ধারায় কোনো আদেশ দেয়া যাবে না,

(ঘ) অনুসন্ধান বা বিচারের জন্য কোনো মামলা ১৯২ ধারায় স্থানান্তর করা যাবে না। 

 

বিধি-৩ 

বিধি-২ তে বর্ণিত ১৫ দিনের মধ্যে অথবা এরপর যে কোনো সময় ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক কোনো কার্যক্রম বা আদেশ প্রদানের পূর্বে উপযুক্ত সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ, ক্ষেত্রমত, উক্ত আসামীর কোর্ট মার্শালে বিচার হবে মর্মে নোটিশ প্রদান করতে পারেন, তখন ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যক্রম বন্ধ করবেন এবং আসামী যদি তার ক্ষমতা বা নিয়ন্ত্রণে থাকে তাহলে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪৯ ধারায় বর্ণিত নির্দিষ্ট তথ্যসহ নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন। 

 

বিধি-৪ 

যখন বিধি-৩ অনুসারে উপযুক্ত সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট উত্থাপন করেন এবং এরূপ কর্তৃপক্ষ আসামীর কোর্ট মার্শালে বিচার হবে মর্মে এরূপ ম্যাজিষ্ট্রেটকে নোটিশ প্রদান করেন এবং এরূপ ম্যাজিষ্ট্রেট এরূপ নোটিশ পাওয়ার পূর্বেই যদি তিনি কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকেন বা বিধি-২ অনুসারে কোনো আদেশ প্রদান করেন তাহলে কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন এবং আসামী তার ক্ষমতা বা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকলে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪৯ ধারায় বর্ণিত নির্দিষ্ট তথ্য সহ নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করবেন। 

 

বিধি-৫ 

একজন অভিযুক্ত ব্যক্তিকে বিধি ৩ অথবা ৪ অনুসারে প্রেরণের পর যদি কোর্ট মার্শাল কর্তৃক আসামীর কৃত অপরাধের বিচার না হয় অথবা কোনো কার্যকরী প্রসিডিং গৃহীত না হয় বা কোনো আদেশ প্রদান না করা হয় তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট এরূপ অবস্থা সম্পর্কে সরকারের নিকট রিপোর্ট করবেন। 

 

বিধি-৬ 

(১) বিধি ২, ৩ বা ৪ এ বিপরীত কোনো কিছু থাকা সত্ত্বেও যখন ম্যাজিষ্ট্রেটের নোটিশে আসে যে, কোনো ব্যক্তি সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী আইনে অপরাধ করেছে যার পরিপ্রেক্ষিতে তার নিকট প্রসিডিং শুরু করা উচিৎ তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট লিখিত নোটিশ দ্বারা উপযুক্ত সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষকে এরূপ ব্যক্তি হাজতে থাকলে আইন অনুসারে প্রসিডিং গ্রহণের  জন্য নিকটবর্তী ম্যাজিষ্ট্রটের নিকট প্রেরণ করতে অথবা কোর্ট মার্শালের কার্যক্রম শুরু হলে এরূপ ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রসিডিং বন্ধ করতে আদেশ প্রদান করতে পারেন এবং কোন আদালতে প্রসিডিং শুরু হবে তা নির্ধারণের জন্য সরকারের নিকট রেফারেন্স পাঠাবেন। 

(২) উপধারা-১ অনুসারে যে উপযুক্ত সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষের নিকট নোটিশ ইস্যু করা হয়েছে সে কর্তৃপক্ষ নোটিশ অনুসারে অপরাধীকে হস্তান্তর করবেন অথবা বিচারের প্রশ্নটি সরকারের দৃষ্টিগোচরে আনবেন এবং সরকারের আদেশেই চুড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। 

 

বিধি-৭

বিষয় ও প্রসঙ্গে বিপরীত কিছু না থাকলে-

(ক) Code বলতে ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধিকে বুঝাবে,

(খ) উপযুক্ত সেনা কর্তৃপক্ষ (Competent military authority) বলতে একটি স্বতন্ত্র ব্রিগেড অথবা সাব এরিয়া কমান্ডার এর নীচের কোনো অফিসার নন অথবা অপরাধী যেখানে কর্মরত সেখানকার কমান্ডিং অফিসারকে বুঝাবে, তবে শর্ত থাকে যে, মৃত্যু ঘটলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ হবেন একজন অফিসার যার একটি স্বতন্ত্র ব্রিগেড বা সাব এরিয়া কমান্ডারের ক্ষমতা থাকবে। 

(গ) “উপযুক্ত নৌ কর্তৃপক্ষ” (Competent military authority) বলতে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে বুঝাবে, যার অধীনে অভিযুক্ত কর্মরত বা সংযুক্ত বা অন্যকোনো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝাবে, তবে শর্ত থাকে যে, যেক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটে সেক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলতে Chief of the Army staff কে বুঝাবে। 

(ঘ) “উপযুক্ত বিমান বাহিনী কর্তৃপক্ষ” (Competent Air Force authority) বলতে অভিযুক্ত ব্যক্তি যার অধীনে কর্মরত বা সংযুক্ত আছেন তাকে বা অন্য কোনো উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বুঝাবে, তবে শর্ত থাকে যে, মৃত্যু ঘটলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলতে (Chief of the Army staff) কে বুঝাবে। 

(ঙ) “কোর্ট মার্শাল” এ অন্তর্ভুক্ত করবে-

(১) ১৯৫২ সালের মাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্টের ২৩ ধারায় কর্তৃত্ব প্রাপ্ত একজন অফিসার,

(২) ১৯৬১ সালের বাংলাদেশ নৌ বাহিনী অধ্যাদেশ এর ৯৫ ধারায় সংজ্ঞায়িত একটি নৌবাহিনী ট্রাইব্যুনাল,

(৩) ১৯৫৩ সালের বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এ্যাক্টের ৮২ অথবা ৮৬ ধারায় কর্তৃত্ব প্রাপ্ত একজন অফিসার। 

(চ) সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী আইনের অধীন ব্যক্তি (Person subject to military, Naval or Air Force Law) বলতে অন্য কোনো আইন ব্যতীত বংলাদেশ অথবা বাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্টের ২ ধারার দফা (খ), বাংলাদেশ নৌ বাহিনী অধ্যাদেশ এর ২ ধারার উপধারা (৩) অথবা বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আইনের ২ ধারার (খ) দফায় উল্লিখিত অপরাধের একজন আসামীকে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট আনা হলে তাকে অন্তর্ভুক্ত করবে। 

 

কোর্ট মার্শালে বিচার্য ব্যক্তিদের সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট সমর্পণ (ফৌদারী কার্যবিধির ৫৪৫ ধারা)।  

(১) সেনা, নৌ বা বিমান বাহিনী আইনের আওতাভুক্ত যে ব্যক্তির বিচার, এ বিধি যে আদালতে প্রযোজ্য সে আদালতে বা কোর্ট মার্শালে হবে, সে সকল ব্যক্তি সম্পর্কিত মামলার জন্য সরকার এ আইন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আইন ১৯৫২, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী আইন ১৯৫৩ এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনী অধ্যাদেশ ১৯৬১ এবং বর্তমানে বলবৎ অনুরূপ অন্য কোনো আইনের সাথে সংগতি রেখে বিধিমালা প্রণয়ন করতে পারবে এবং যে আদালতে বা কোর্ট মার্শালে এ আইন প্রযোজ্য সে আদালতে বা কোর্ট মার্শালে বিচার্য কোনো অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে কোনো ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট হাজির করা হলে উক্ত ম্যাজিষ্ট্রেট উক্ত নিয়মের প্রতি লক্ষ্য রাখবেন এবং উপযুক্ত ক্ষেত্রে অপরাধের একটি বিবরণ সহ আসামীকে কোর্ট মার্শালে বিচারের উদ্দেশ্যে সে যে বাহিনীর, কোর, জাহাজ বা উপদলের অন্তর্ভুক্ত তার কমান্ডিং অফিসারের নিকট অথবা নিকটতম স্থল, নৌ বা বিমান বাহিনীর কমান্ডিং অফিসারের নিকট অর্পণ করবেন। 

এরূপ ব্যক্তিদের গ্রেফতারঃ  

(২) উপরোক্ত কোনো স্থানে অবস্থিত বা নিযুক্ত কোনো সৈনিক, নাবিক বা বৈমানিক দলের কমান্ডিং অফিসারের নিকট হতে উক্ত উদ্দেশ্যে কোনো লিখিত দরখাস্ত পাবার পর প্রত্যেক ম্যাজিষ্ট্রেট উক্ত অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও  হাজির করার সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।  

 

পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গলের পরিশিষ্ট XXV!!

(প্রবিধান ৪৩৮)।

সামরিক অপরাধীদের ক্ষেত্রে অনুসরণীয় বিধি সমূহ

ফৌজদারী আদালত এবং কোর্ট মার্শালের অধিক্ষেত্রের আওতাধীন একজন অভিযুক্ত ব্যক্তির ক্ষেত্রে নিম্নে বর্ণিত বিধি সমূহ প্রতিপালন করতে হবে- 

যখন ১৯৫২ সালের আর্মি এ্যাক্টের নিয়ন্ত্রণাধীন একজন ব্যক্তির বিচারে ফৌজদারী আদালত এবং কোর্ট মার্শাল উভয়ের অধিক্ষেত্রে আছে এবং উক্ত ব্যক্তি সামরিক হেফাজতে আছেন তখন প্রেসক্রাইবড সামরিক কর্তৃপক্ষ মামলাটি ফৌজদারী আদালতে বিচার হবে মর্মে সিদ্ধান্ত নিলে অভিযোগটি তদন্ত করতে ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট উত্থাপন করবেন এবং এতদুদ্দেশ্যে আসামীকে সমর্পণ করবেন। এ ব্যাপারে সহকারী সুপারের পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন অফিসার সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট অধিযাচন পত্র দিবেন এবং অ-আমলযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক স্বাক্ষরিত পরোয়ানা সাথে থাকবে। যদি তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, অভিযোগটি কোর্ট মার্শাল কর্তৃক বিচার হবে তাহলে এরূপ বিচারকে পেন্ডিং রেখে আসামীকে সামরিক হেফাজতে রাখবে এবং ম্যাজিষ্ট্রেট যদি বিবেচনা করেন যে, অভিযোগ ফৌজদারী আদালত কর্তৃক বিচার হবে তাহলে কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। যেক্ষেত্রে এরূপ মামলার আসামী বেসামরিক হেফাজতে সেক্ষেত্রে প্রেসক্রাইবড সামরিক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ না করা পর্যন্ত এবং অফিসারের সিদ্ধান্ত নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত অভিযোগটির তদন্ত শুরু করবেন না। কোর্ট মার্শালের অনুকুলে অফিসারের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হলে ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যক্রম শুরু করবেন তবে ইত্যবসারে আসামীকে সামরিক হেফাজতে প্রেরণ করতে হবে। যদি বেসামরিক পুলিশের নিকট আর্মি এ্যাক্ট কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত বা কর্তৃক  চুরি অথবা অন্যান্য অপরাধ সংঘটনের তথ্য থাকে এবং মামলা এমন প্রকৃতির যে, ফৌজদারী আদালত বা কোর্ট মার্শালের অধিক্ষেত্রে আছে এবং “ক” এরূপ পুলিশ ছাড়া ধৃত হলে তাৎক্ষণাৎ বেসামরিক হেফাজতে রাখতে হবে এবং কমান্ডিং অফিসার কর্তৃক কোর্ট মার্শালে বিচার হবে মর্মে সিদ্ধান্ত না নেয়া পর্যন্ত এরূপ হেফাজতে থাকবে। ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক “ক” এর গ্রেফতার সম্পর্কে উক্ত অফিসারকে অবহিত করতে হবে এবং যদি সিদ্ধান্তটি কোর্ট মার্শালের স্বপক্ষে হয় এবং যুক্তিসংগত সময়ের মধ্যে ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে ম্যাজিষ্ট্রেট তাৎক্ষণাৎ সামরিক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সরবরাহকৃত এসকর্ট এর মাধ্যমে “ক” কে সামরিক কর্তৃপক্ষের নিকট সমর্পণ করবেন। বেসামরিক হেফাজতে রক্ষিত কোনো আসামীর বিচার কোর্ট মার্শালে হবে কিনা এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযোগের উপর তদন্ত শুরুর পূর্বে কমান্ডিং অফিসারের সাথে যোগাযোগ করবেন এবং উপরে বর্ণিত উপায়ে অগ্রসর হবেন। একই ধরণের সন্দেহের ক্ষেত্রে যদি আসামী সামরিক হেফাজতে থাকে তাহলে ম্যাজিষ্ট্রেট কার্যক্রম গ্রহণের পূর্বে কমান্ডিং অফিসারের সাথে যোগাযোগ করবেন। যেক্ষেত্রে ফৌজদারী আদালত এবং কোর্ট মার্শালের সহ অধিক্ষেত্র আছে সেক্ষেত্রে বিধান অনুসারে আসামীর কোর্ট মার্শালে বিচার হওয়া বাঞ্চনীয়। 

(২) উপরে বর্ণিত বিধান সমূহ কেবল ১৯৫২ সালের বাংলাদেশ আর্মি এ্যাক্টের নিয়ন্ত্রণাধীন ব্যক্তি অর্থাৎ সামরিক বাহিনীর কমিশন অফিসার হউক বা না হউক তাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।   

Google News Google News
Google News এ বিরাট বাজারের সকল পোস্ট পেতে ক্লিক করে ফিডটি ফলো করুন