⚖️ বিট পুলিশিং কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 6 days ago
- Category: অপরাধ বিজ্ঞান
দুষ্টের দমন ও শিষ্টের প্রথা পালনই হইল পুলিশের প্রধান কর্তব্য। সমাজে আইন-শৃংখলা রক্ষা করা, জনজীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, জনগনের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধান করা, জনগনের চলাচল নির্বিঘ্ন করা, সবলের অত্যাচার হইতে দুর্বলকে রক্ষা করা প্রভৃতি নানা ধরনের কাজে পুলিশ সদস্যদেরকে সদা সক্রিয় থাকিতে হয়। পুলিশি কার্যক্রমে পুলিশ আইনসংগতভাবেই জনসাধারণের সাহায্য সহায়তা পাইতে পারে। তাই পুলিশকে জনসাধারণের কাছাকাছি থাকিয়া জনগনের ভালো মন্দের প্রতি নজর রাখিয়া পুলিশি কার্যক্রম পরিচালনা করিতে হয়। জনগনের সাহায্য সহায়তা তথা পুলিশি কার্যক্রমে জনগনের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য এবং কার্যক্রমে সফলতা লাভ করার জন্য পুলিশকে সময়ের সাথে তাল মিলাইয়া প্রতিনিয়তই কিছু না কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করিতে হয়। যেমন- গ্রাম পুলিশ গঠন, সংরক্ষণ ও পরিচালনা এবং কমিউনিটি পুলিশিং এর কার্যক্রম গ্রহণ। পুলিশের সাথে সম্পৃক্ত থাকিয়া এই ধরণের কার্যক্রম পরিচালিত হইয়া থাকে।
গ্রামে যেমন গ্রাম পুলিশ ও ভিলেজ ডিফেন্স পার্টির সদস্যরা পুলিশের সহায়ক শক্তি হিসাবে কাজ করিয়া থাকে ইউনিয়ন ভিত্তিক, তেমনি শহর এলাকায় প্রত্যেক থানার এলাকাকে মহল্লার সমন্বয়ে কয়েকটি বিটে ভাগ করা হয়। এই বিটের সাথে কমিউনিটি পুলিশের সদস্যদেরকে বর্তমানে সমন্বয় করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট থানায় কর্মরত এসআই/এএসআইকে বিটের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে তাহার বিটের আওতাধীন এলাকায় যাবতীয় পুলিশি কার্যক্রমের জন্য জবাবদিহি করিতে হয়। থানায় বিট ভিত্তিক বিভিন্ন তালিকা প্রস্তুত করা হয়, যাহাতে পুলিশি কার্যক্রমে অধিক সফলতা আসে।
উল্লিখিত বিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার শহর প্রতিরক্ষা দলের সদস্য, কমিউনিটি পুলিশের সদস্য, ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সমাজের সচেতন সদস্যদের সহায়তা ও পরামর্শে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করিয়া পুলিশি কার্যক্রমকে চালাইয়া নিয়া থাকেন। ফলে এলাকার খারাপ চরিত্রের লোকদের সকল তথ্য পুলিশ পূর্বেই প্রাপ্ত হইয়া সঠিক কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারে। অন্য বিটের বা থানার বহিরাগত খারাপ চরিত্রের লোকের আগমন ঘটিলে বিটের অফিসার সহজেই সংবাদ পাইতে পারেন। নির্দিষ্ট বিটের মধ্যে বসবাসকারী জনগনের সাহায্য সহায়তা নিয়া যথাযথ নিয়মে কার্যকরী পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করিলে, তালিকা মোতাবেক অপরাধী, সন্দিগ্ধ ব্যক্তি ও বহিরাগতদের গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখিলে সমাজকে অপরাধমুক্ত রাখা সম্ভব হইবে। তবে পুলিশকে অবশ্বই প্রথমে নিজ নিজ কাজ-কর্মের মাধ্যমে জনগনের আস্থা অর্জন করিতে হইবে এবং তখনই সফলতা আসিবে।
বিট পুলিশিং-এর মাধ্যমে সমাজকে অপরাধ মুক্ত রাখাঃ
বিট পুলিশিং কার্যকরী করিতে হইলে প্রত্যেক বিট অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার ও সদস্যদেরকে সঠিক পুলিশি মনোভাব নিয়া কাজ করিতে হইবে এবং জনগনের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করিতে হইবে। স্থানীয় জনগনকে বিট পুলিশিং সম্পর্কে বুঝাইতে হইবে এবং ইহার কার্যক্রম দ্বারা জনগন কিভাবে উপকৃত হইবে, তাহার একটা পরিস্কার ধারণা দিতে হইবে। তবেই জনগণ উৎসাহবোধ করিবে এবং পুলিশকে সঠিক সময়ে সঠিক সাহায্য প্রদান করিবে। পুলিশ সসদস্যদেরকে জনগনের সাথে তাহাদের বিদ্যমান দুরত্ব কমাইতে হইবে, যাহাতে জনগন পুলিশকে বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করিতে আগ্রহী হয়। স্থানীয় গোষ্ঠিগত বা দলগত বিরোধ থাকিলে পুলিশকে তাহা নিরপেক্ষভাবে মিটাইয়া ফেলার ব্যবস্থা নিতে হইবে, তবেই আশুফল লাভ করা সম্ভব হইবে। জনগন যেন তাদের এলাকার স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়, সেইভাবে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করিতে হইবে। সমাজের কোনো সদস্য বিট পুলিশিং ব্যবস্থার বিরুদ্ধাচারণ করিলে, গণসচেতনতা তৈরির মাধ্যমে তাহা নিরসন করিতে হইবে। পুলিসশের প্রতি জনগনের সবসময়ই অনেক প্রাপ্তির প্রত্যাশা থাকে, সেই সম্পর্কে পুলিশের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি জনগনকে ভালোভাবে জানাইতে হইবে। তাহা হইলে জনগন পুলিশের উপর বিশ্বাস স্থাপন করিবে এবং বিট পুলিসিং কার্যক্রম সফল