⚖️ ধুতুরার বিষ কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 2 weeks ago
- Category: অপরাধ বিজ্ঞান
ধুতুরা এক ধরণের গাছ। বাংলাদেশে দুই ধরণের ধুতুরা গাছ দেখিতে পাওয়া যায়। একটির ফুল সম্পূর্ণ সাদা এবং অন্যটিতে বেগুনি রঙের দাগযুক্ত ফুল ফুটে। উভয় ধরণের ফুল হইতেই বেশ বড় গোলাকার কাটাযুক্ত ফল হয়। এই দুই জাতের ফলই বিষাক্ত। ফলের শুকনা গুড়া বিষক্রিয়ায় ব্যবহার করা হইয়া থাকে। তবে এই গাছের সকল অংশই বিষাক্ত। ধুতুরার জাত দুইটি। যথা-
(১) ধুতুরা ফেটোউসা এবং
(২) ধুতুরা স্ট্রামোনিয়াম।
ইহা স্নায়ুবিক বিষ।
ধুতুরার বিষের লক্ষণ বা উপসর্গঃ
এই বিষ সেবনের পর পাকস্থলিতে বেশ প্রভাব বিস্তার করে এবং নিম্নলিখিত উপসর্গসমূহ প্রকাশ করিয়া থাকে।
(১) সেবনকারীর মাথা ঘুরে, শরীর স্থির থাকে না, মুখে বিস্বাদ লাগে;
(২) গলা ও মুখ শুকাইয়া যায়;
(৩) দৃষ্টিশক্তি আস্তে আস্তে ঝাপসা দেখায়;
(৪) কণ্ঠস্বর ক্রমেই ক্ষীণ হইয়া আসে।
(৫) হৃদযন্ত্র ও নারীর গতি দ্রুত হয়;
(৬) ত্বক শুকনা ও খসখসে হয়;
(৭) কথাবার্তা অসংলগ্ন হইয়া পড়ে;
(৮) মন কল্পনাপ্রবন হয়;
(৯) শরীর ক্রমশ অবসন্ন হইয়া পড়ে;
(১০) শরীরের তাপ হ্রাস পায়, কখনও ১০৫ ডিগ্রী পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়;
(১১) বিষের মাত্রা বেশি হইলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হইয়া মৃত্যু পর্যন্ত ঘটিতে পারে;
(১২) আধা ঘন্টা হইতে এক ঘন্টার মধ্যেই বিষের ক্রিয়া শুরু হয়।
ধতুরার বিষ প্রয়োগ ক্ষেত্রঃ
(১) দস্যুতাঃ ধুতুরার বিষ প্রয়োগে অজ্ঞান হইবার পূর্বেই মালামাল কাড়িয়া নেওয়া হয়।
(২) চুরিঃ ঘরে ঢুকিয়া এই বিষ প্রয়োগে অজ্ঞান করিয়া মালামাল চুরি করা হয়।
(৩) প্রতারণাঃ রেল, স্টিমার, লঞ্চ, বাস প্রভৃতির স্ট্যান্ডে অপেক্ষমান এবং চলন্ত যাত্রীদের সাথে মিথ্যা পরিচয় দিয়া একটি সম্পর্ক স্থাপন করিয়া খাদ্য দ্রব্য, পানীয়ের এবং পান সিগারেটের সাথে এই বিষ প্রয়োগ করিয়া যাত্রীকে অজ্ঞান করিয়া মালামাল, টাকা-পয়সাসহ যাবতীয় জিনিসপত্র নিয়া কৌশলে সরিয়া যায়।
(৪) বাংলাদেশে সমুদ্র ও নৌবন্দর এবং স্থলবন্দরসহ সর্বত্রই, যেখানে জনতার ভির থাকে, সেই সকল স্থানে নানান কৌশলে ধুতুরার বিষ প্রয়োগ করা হইয়া থাকে।