⚖️ জালিয়াতি কত প্রকার ও কি কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 4 days ago
  • Category: অপরাধ বিজ্ঞান

জালিয়াতিঃ যে ব্যক্তি জনগণ বা কোনো ব্যক্তি বিশেষের ক্ষতি বা অনিষ্ট সাধন করা বা কোনো দাবী বা অধিকার সমর্থন করা অথবা কোনো ব্যক্তিকে সম্পত্তি পরিত্যাগ করিতে বা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ চুক্তি সম্পাদনে বাধ্য করিবার অভিপ্রায়ে কিংবা প্রতারণা বা প্রতারণা করা যাইতে পারে এইরূপ অভিপ্রায়ে কোনো মিথ্যা দলিল বা এমন দলিলের অংশবিশেষ তৈরি করে, সেই ব্যক্তি জালিয়াতি করিয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে (বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৬৩ ধারা)। 

 

জালিয়াতি ৪ (চার) প্রকার। যেমন- 

(১) মুক্তহস্ত, অনুকরণ বা নকলকৃত জালিয়াতি (Free hand, Sumulated or Copied Forgery)। 

(২) ট্রেসিং জালিয়াতি (Traced Forgery)। 

(৩) স্মৃতির সাহায্যে জালিয়াতি (Forgery by Memory)।

(৪) নমুনা ব্যতীত জালিয়াতি বা অন্যের নামে জালিয়াতি (Forgery without model or Forgery by impersonation)

এই প্রকারভেদ দস্তখত বা হাতের লেখা সনাক্তকরণ ও তুলনার উদ্দেশ্যে করা হইয়া থাকে। 

 

ট্রেসিং জালিয়াতির পদ্ধতিসমূহঃ

(ক) কার্বন পেপার দ্বারা ট্রেসিং জালিয়াতিঃ আসল দস্তখত বা লেখা সম্বলিত কাগজটির নিচে একটি উপযুক্ত কাগজ রাখিয়া দুইটি কাগজের মাঝে অর্থাৎ নিচের কাগজটির উপরে একটি কার্বন পেপার সেট করিয়া কালি ছড়া একটি কলম ব্যবহার করিয়া আসল দস্তখত বা লেখার উপর কলম চালাইলেই ট্রেসিং জালিয়াতি সম্পন্ন হইবে। অর্থাৎ যখন সাধারণ কলম দিয়া কার্বনের দাগের উপর দিয়া লেখা হইবে, তখনই জাল কাগজটি তৈরি হইবে। 

 

(খ) কার্বন পেপার ব্যতীতঃ কার্বন পেপার ব্যবহার না করিয়াও ট্রেসিং জালিয়াতি সম্ভব। এই পদ্ধতিতে উপর্যুক্ত পদ্ধতির মতো দুইটি কাগজের মাঝখানে কোনো কার্বন পেপার সেট করা হয় না। তবে আসল লেখার উপর কলমের নিব সদৃশ কোনো বস্তু দ্বারা চাপ দিয়া লিখিলেই নিচের কাগজে আসল লেখার ছাপ পড়িবে। এই ছাপের উপর দিয়া সাধরণ কলম চালাইলেই ট্রেসিং জালিয়াতি সম্পন্ন হইবে, তখন জাল কাগজটি প্রস্তুত হইবে। 

 

(ঘ) আলোর প্রতিসরণ এর মাধ্যমেঃ আসল দস্তখত বা লেখার উপর একটি সাদা কাগজ রাখিয়া জোরালো আলো এই দস্তখতের উপর ফেলাইলে সাদা কাগজটিতে দস্তখতটি স্পষ্টভাবে দেখা যাইবে এবং ঐ ছায়ার উপর কলম দিয়া লিখিলেই ট্রেসিং জালিয়াতি সম্পন্ন হইবে। 

 

সনাক্তকরণঃ জালিয়াতিটি ট্রেসিং পদ্ধতিতে তৈরি করা হইয়াছে তখনই বলা যাইবে, যখন

(১) যে মডেল হইতে ট্রেসিং করা হইয়াছে, সেইটি আবিস্কার করা যায়; 

(২) দস্তখত বা লেখার পাশাপাশি পেন্সিল বা কার্বনের দাগ পাওয়া যায়; 

(৩) জাল কাগজটিতে ট্রেসিং এর দাগ বা চিহ্ন পাওয়া যায়;

(৪) দুইটি দস্তখত বা লেখার মধ্যে সন্দেহজনক স্থানগুলিতে খুব বেশি মিল থাকে এবং একটিকে অন্যটির প্রতিরূপ মনে হয় অথবা একটির উপর অন্যটিকে প্রতিস্থাপন করা হইলে প্রধান প্রধান অংশগুলি সমপাতিত হয়।