⚖️ আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধ কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 1 week ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
সাধারণ অর্থে আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধ বলতে গুরুতর প্রকৃতির অপরাধকে বুঝায়। এমন অপরাধের জন্য পুলিশ কেইস হয় এবং পুলিশ বিনা পরোয়ানায় অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারে। কিন্তু আইনের দৃষ্টিতে আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধের ধারণা কিছুটা ভিন্ন। অনেক গুরুতর অপরাধ আমলযোগ্য বা ধর্তব্য নয় আবার কিছু লঘু অপরাধও আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধ হিসেবে গণ্য। ফৌজদারী কার্যবিধির ৪(১)(চ) ধারায় আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধ নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। 

          আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধ অর্থ সেসব অপরাধ যা ফৌজাদারী কার্যবিধির দ্বিতীয় তফসিল অথবা বর্তমানে বলবৎ যেকোনো আইন অনুসারে কোনো পুলিশ অফিসার অপরাধীকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে। যেমন- ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি দ্বিতীয় তফসিল অনুসারে আমলযোগ্য অপরাধ এবং এক্ষেত্রে অপরাধীকে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করতে পারে। 

          ফৌজেয়ারী কার্যবিধির ১৫৪, ১৫৬ ও ১৫৭ ধারা অনুসারে কনস্টেবল ছাড়া যেকোনো পুলিশ অফিসার অর্থাৎ এএসআই থেকে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ অফিসার থানার দায়িত্বে থাকাকালে যদি আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধের সংবাদ থানায় আসে এবং সংবাদদাতা মৌখিকভাবে বা লিখিতভাবে তা দেন তাহলে পুলিশ অফিসার সরকার কর্তৃক নির্ধারিত (FIR) ফরমে তা লিপিবদ্ধ করবেন এবং সংবাদদাতার স্বাক্ষর নিবেন এবং পুলিশ অফিসার নিজেও তাতে স্বাক্ষর করবেন। এজাহারের সরমর্ম জেনারেল ডায়রী (GD) তে লিপিবদ্ধ করবেন। 

          আমলযোগ্য বা ধর্তব্য অপরাধের সংবাদ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তি বা ঘটনার সংবাদ শুনে অপর কোনো ব্যক্তি থানায় দিতে পারেন। উভয় ক্ষেত্রে মামলা নেয়া বাধ্যতামূলক। অভিযোগকারী গুরুতর আঘাত পেলে তার ডাক্তারী সার্টিফিকেটের অভাবে মামলা নেয়া থেকে বিরত থাকা যাবে না। সংবাদটি শুধুমাত্র গুজব হলে এজাহার গ্রহণ না করে জেনারেল ডায়রীভুক্ত করে সরেজমিনে বিষয়টি যাচাই করা যাবে। 

          থানার দায়িত্বে বিশেষ পরিস্থিতিতে যদি কোনো কনস্টেবল থাকেন তবে তিনি সংবাদদাতার স্বাক্ষর করা অভিযোগ গ্রহণ করবেন এবং জেনারেল ডায়রীতে তার সারমর্ম লিপিবদ্ধ করবেন। কিন্তু সরকার কর্তৃক নির্ধারিত (FIR) ফরমে নিজে মামলা রুজু করবেন না। অভিযোগকারীকে মামলার সংক্ষিপ্তসারসহ অফিসার ইনচার্জ এর কাছে প্রেরণ করবেন। ডাকাতি এবং খুনের বা মারাত্মক ঘটনা হলে সার্কেল অফিসারকে অবগত করে অপরাধীকে গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিবেন (পিআরবি ২৪৩ প্রবিধান)। 

 

মামলা গ্রহণের পর করণীয়ঃ  

ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৬ ধারা মোতাবেক তদন্তকারী পুলিশ অফিসার মামলা তদন্ত শুরু করবেন। অপরাধীকে গ্রেফতার ও মামলার ঘটনা এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে তদন্ত করার জন্য ঘটনাস্থলে রওয়ানা হবেন। ঘটনা যদি গুরুতর প্রকৃতির না হয় এবং এজাহারে অপরাধীর নাম-ঠিকানা থাকে তখন তদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে রওয়ানা হওয়ার প্রয়োজন নেই। যদি প্রতীয়মান হয় যে মামলা তদন্ত শুরু করার মতো পর্যপ্ত কারণ নেই তবে থানার অফিসার ইনচার্জ তদন্ত থেকে বিরত থাকতে পারেন এবং বিষয়টি বাদীকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফরমে জানিয়ে দিবেন (ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৭ ধারা এবং পিআরবি ২৫৭ প্রবিধান)। 

Google News Google News
Google News এ বিরাট বাজারের সকল পোস্ট পেতে ক্লিক করে ফিডটি ফলো করুন