⚖️ পুলিশ ম্যাজিষ্ট্রেট সম্পর্কীয় বিধানাবলী কি কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 2 weeks ago
- Category: পিআরবি
-
বিভাগীয় কমিশনারের কর্তৃত্বঃ (প্রবিধান-১৩, পিআরবি)
(ক) স্থানীয় প্রশাসনের প্রধান হিসাবে বিভাগীয় কমিশনার পুলিশ সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কার্যক্রমের উপর তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করবেন।
(খ) বিভাগীয় কমিশনারের নিকট হতে সরাসরিভাবে অথবা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মাধ্যমে প্রাপ্ত যে কোনো নির্দেশ পুলিশ সুপার দ্রুততার সাথে কার্যকরী করবেন। তবে যদি বিধিবদ্ধ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয় এমন প্রকৃতির কোনো নির্দেশ প্রাপ্ত হলে পুলিশ সুপার তা সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এর মাধ্যমে ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) এর নিকট প্রতিবেদন পাঠাবেন।
ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এবং বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মধ্যে সম্পর্কঃ (প্রবিধান-১৪, পিআরবি)
(ক) সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) স্ব স্ব অধিক্ষেত্রে শান্তি-শৃংখলা রক্ষা এবং অপরাধ দমন ও উদঘাটনের উদ্দেশ্যে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটদের সাথে ঘনিষ্ট সংযোগ রক্ষা করে চলবেন এবং পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেটদের মধ্যে সম্প্রীতিমূলক সহযোগিতা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সকল প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন।
(খ) তিনি সাধারণত আধা-সরকারী বা বেসরকারীভাবে চিঠিপত্রের মাধ্যমে কমিশনারের সাথে এবং পুলিশ সুপারের মাধ্যমে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটগণের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবেন, কিন্তু জেলা সদর দপ্তর সফর করার সময় তাদের সাথে ব্যক্তিগতভাবে আলাপ আলোচনা করার বিষয়টি বিবেচনা করবেন।
পুলিশ সুপার এবং জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মধ্যে সম্পর্কঃ (প্রবিধান-১৫, পিআরবি)
(ক) পুলিশ সুপার হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ বাহিনীর উর্ধ্বতন প্রধান কর্মকর্তা। জেলা পুলিশের অভ্যন্তরীণ আর্থিক বিষয়াদী, বাহিনীর ব্যবস্থাপনা, কর্মদক্ষতা ও শৃংখলা সংক্রান্ত সকল ব্যাপারে তিনিই দায়িত্ববান। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সাধারণ নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে জেলার ফৌজদারী প্রশাসন এবং তার অধীনস্থ অফিসার কর্তৃক সকল প্রতিরোধমূলক ও নির্বাহী কর্তব্যসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালনের ব্যাপারেও তিনি দায়ী থাকেন।
(খ) পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ সংগঠন ও শৃংখলার ব্যাপারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের হস্তক্ষেপ করার কোনো কর্তৃত্ব নেই, কিন্তু যে সকল পুলিশ অফিসারের আচরণ ও যোগ্যতা তার জেলার সাধারণ প্রশাসনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে এমন সকল বিষয় পুলিশ সুপারের গোচরে আনা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের কর্তব্য।
(গ) জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তার জেলার যে কোনো পুলিশ অফিসারের আচরণ ও চরিত্র সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র তলব করতে পারেন এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল ও বিভাগীয় কমিশনারের অবগতির জন্য রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) এর নিকট প্রেরণ করতে পারেন। কোনো পুলিশ অফিসারের অসদাচরণের ব্যাপারে তদন্ত করার জন্য তিনি নির্দেশ দিতে পারেন। গুরুত্বর অসদাচরণের কাগজপত্র এবং পুলিশ ও জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে এমন বিষয় পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট প্রেরণ করবেন।
(ঘ) বিচার বিষয়ক কর্তৃত্বের বহির্ভুত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের পুলিশ সংক্রান্ত অন্যান্য নির্দেশাবলী পুলিশ সুপারের নামে পাঠাতে হবে এবং সদর দপ্তরে পুলিশ সুপারের অনুপস্থিতিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের নিকট পাঠাতে হবে। পুলিশ বাহিনীর অভ্যন্তরীণ আর্থিক বিষয়, সংগঠন ও শৃংখলা এবং একান্তভাবে পুলিশ বিভাগীয় বিষয় ব্যতীত পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নিয়ন্ত্রাধীনে জেলা পুলিশের স্থানীয় প্রধান কর্মকর্তা হিসেবে সকল নির্দেশ পালন করতে বাধ্য থাকবেন।
(ঙ) পুলিশ প্রশাসন সংক্রান্ত কোনো ব্যাপারে পুলিশ সুপার ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মধ্যে কোনো মতানৈক্য দেখা দিলে পুলিশ সুপারের কর্তব্য হবে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশ পালন করা। এরূপ ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিষয়টি তাৎক্ষনাৎ বিভাগীয় কমিশনারকে এবং পুলিশ সুপার একইভাবে রেঞ্জ ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) কে জানাবেন। অতঃপর কমিশনার ও ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন এবং সম্ভব হলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে উপনীত হবেন। যদি কোনো সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারেন, তাহলে বিষয়টি ইন্সপেক্টর জেনারেলের মাধ্যমে সরকারের নিকট প্রেরণ করবেন।
(চ) জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রয়োগকালে পুলিশ সুপারের কর্তৃত্বকে দুর্বল করে অথবা তার দায়িত্বকে খর্ব করতে পারে এরূপ কোনো কাজ করা হতে বিরত থাকবেন। এ কারণে পুলিশ সুপারের সাথে আলোচনা না করা পর্যন্ত কোনোরূপ নির্বাহী আদেশ প্রদান করা হতে যতদুর সম্ভব বিরত থাকবেন।
(ছ) একান্ত বিভাগীয় বিষয় ব্যতীত পুলিশ সুপার আইন অথবা পদ্ধতিগত আইনের ব্যাপারে কোনো বিজ্ঞপ্তি বা সাধারণ নির্দেশ জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের অনুমোদন ব্যতিরেকে জারী করবেন না।
পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ রক্ষা করবেনঃ (প্রবিধান-১৬, পিআরবি)
(ক) যখনই সম্ভব হবে তখই পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে সার্বক্ষণিকভাবে ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন এবং সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সাথে পরামর্শ করবেন। জেলার ফৌজদারী প্রশাসনের ব্যাপারে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে সম্ভাব্য সকল প্রকার সহায়তা প্রদান করা তার দায়িত্ব এবং এতদসংক্রান্ত বিষয়ে তিনি যতদুর সম্ভব জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের ইচ্ছার প্রতি সম্মতি জ্ঞাপন করবেন। যদি কোনো বিষয়ে তারা একমত না হন তাহলে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট পুলিশ সুপারকে লিখিতভাবে নির্দেশ প্রদান করবেন এবং পুলিশ সুপার তা প্রতিপালন করবেন কিন্তু পুলিশ সুপার যদি ইচ্ছা করেন তবে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট বিরোধীয় বিষয়টি ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেলের অবগতির জন্য প্রেরণ করবেন। তখন প্রবিধান ১৫(গ) তে বর্ণিত পদ্ধতি অনুযায়ী তা নিস্পত্তি করা ববে।
(খ) পুলিশ সুপার জেলার শান্তি শৃংখলা সংক্রান্ত তার গোচরীভূত সকল বিষয় জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে সম্পূর্ণভাবে অবহিত করবেন এবং তিনি সফরে থাকাকালীন সময়ে সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদী জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে জ্ঞাত করবেন, কারণ সব তথ্যাদী পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পেতে বিলম্ব হবে।
(গ) কর্মস্থল তাগ করার প্রাক্কালে পুলিশ সুপার তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে অবগত করবেন এবং তাকে কোন দিন কোথায় পাওয়া যাবে তা জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে সুনির্দিষ্টভাবে জানাবেন এবং জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট যদি প্রয়োজন মনে করেন তবে তার কারণ লিপিবদ্ধ করে পুলিশ সুপারকে সদর দপ্তরে অবস্থানের জন্য বলবেন।
পুলিশ সুপার ও জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের মধ্যে পত্র বিনিময়ঃ (প্রবিধান-১৭, পিআরবি)
জেলা ম্যজিষ্ট্রেট এবং পুলিশ সুপারের মধ্যে পত্র বিনিময় বেসরকারী নোট ও আনুষ্ঠানিক স্মারকলিপির মাধ্যমে সম্পাদিত হবে। যখন সম্ভব হয় মূল নথিটি কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ফেরত পাঠাতে হবে এবং কোনো অবস্থাতেই আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্র লেখা যাবে না।
পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ জারী হবেঃ (প্রবিধান-১৮, পিআরবি)
বিচার বিভাগীয় আদেশ ব্যতীত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের অফিস হতে প্রদত্ত পুলিশ সংক্রান্ত সকল নির্দেশাবলী সাধারণত পুলিশ সুপারের মাধ্যমে পাঠাতে হবে। জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও অন্যান্য অফিসারগণের সফরসূচী এবং পুলিশ কর্তৃক রসদ সরবরাহ করার আদেশও উহার অন্তর্গত হবে।
জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক থানা পরিদর্শনঃ (প্রবিধান-১৯, পিআরবি)
জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট অপরাধ দমন ও উদঘাটনের উপর সার্বক্ষনিকভাবে তদারকী করবেন এবং ঐ সকল কার্যক্রম সুষ্টু পরিচালনার ব্যাপারে মূলতঃ তিনিই দায়ীত্ববান। নিয়মিত বিরতির পর জেলার অন্তর্গত থানা সমূহ পরিদর্শন করা তার দায়িত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুলিশ বিভাগের বিস্তারিত কার্য পদ্ধতি পরীক্ষা করার তার (জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের) প্রয়োজন নেই। তবে নিম্ন লিখিত বিষয় সমূহের উপর তিনি বিশেষ মনোযোগ দিবেন।
(১) জেনারেল ডায়রী ও কি পদ্ধতিতে তা লেখা হয়েছে;
(২) অত্যাবশ্যকীয় পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধকরণ;
(৩) অস্ত্র আইনের যথাযথ প্রয়োগিক কর্মপদ্ধতি;
(৪) শস্য সংগ্রহ পদ্ধতি সংক্রান্ত পরিসংখ্যাণ;
(৫) গ্রাম পুলিশের কর্মকান্ড;
(৬) থানার অপরাধের সাধারণ অবস্থা এবং অপরাধের বৃদ্ধি বা হ্রাসের কারণ সমূহ,
(৭) সাব ইন্সপেক্টরদের স্বীয় দায়িত্ব সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান আছে কিনা, তার অধিক্ষেত্রের স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে তিনি ঘনিষ্ট সম্পর্ক রাখেন কিনা, স্থানীয় বিষয়াদী সম্পর্কে তিনি জ্ঞান অর্জন করেছেন কিনা এবং নিজের কাজের প্রতি আগ্রহশীল কিনা;
(৮) থানার পুলিশ অফিসারগণ যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন বলে প্রতীয়মান হয় কিনা এবং তাদের দায়িত্ব ও পার্শ্ববর্তী এলাকা সম্পর্কে তাদের জ্ঞান আছে কিনা;
(৯) নিয়মিত ও সুষ্ঠুভাবে থানা পরিদর্শন করা হচ্ছে কিনা।
জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এবং পুলিশ অফিসারগণের বদলীঃ (প্রবিধান-২০, পিআরবি)
(ক) যদি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লক্ষ্য করেন যে, ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার বা উহার নিম্ন পর্যায়ের কোনো পুলিশ অফিসার তার স্থানীয় এলাকার জন্য বা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের জন্য অযোগ্য বা অদক্ষ তাহলে এ ব্যাপারে তিনি পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষন করতে পারেন এবং তাকে অন্য এলাকায় বদলি করা বা অন্য কর্তব্যে নিয়োগ করার যৌক্তিকতা সম্পর্কে বিবেচনা করার জন্য পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করতে পারেন। তবে তাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, পুলিশের কাজে বদলি শুধু ক্ষতিকরই নয়, যে অফিসারকে বদলি করা হচ্ছে নতুন জায়গায় তিনি একই অযোগ্যতার পরিচয় দিতে বা আরও অধিকতর খারাপ করতে পারেন। অসন্তোষজনক কাজের জন্য শাস্তি প্রদান করা হয় এবং সামগ্রিকভাবে জেলার ফৌজদারী প্রশাসন ব্যবস্থার উন্নয়নের সম্ভাবনা যদি না থাকে তাহলে বদলির জন্য সুপারিশ করা উচিৎ হবে না।
(খ) ম্যাজিষ্ট্রেট যদি পুলিশ ইন্সপেক্টরের উপরের পদমর্যাদার কোনো পুলিশ অফিসারের অদক্ষতা বা অযোগ্যতা লক্ষ্য করেন তাহলে তিনি বিষয়টি ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) কে অবহিত করবেন এবং তিনি ম্যাজিষ্ট্রেটের মতামত যত্নের সাথে বিবেচনা করে কি ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ তা নির্ধারণ করবেন এবং এ ব্যাপারে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা ম্যাজিষ্ট্রেটকে জানাবেন।
অধস্তন ম্যাজিষ্ট্রেটের সাথে পুলিশের সম্পর্কঃ (প্রবিধান-২১, পিআরবি)
(ক) বর্তমানে বলবত ফৌজদারী কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইন বা সরকার কর্তৃক প্রণীত বা অনুমোদিত অপর কোনো বিধান ব্যতীরেকে পুলিশের কর্মকান্ডে হস্তক্ষেপের কোনো ক্ষমতা অধস্তন ম্যাজিষ্ট্রেটের নেই। কিন্তু পুলিশী মামলা আমলে নেয়ার এখতিয়ারবান ও ক্ষমতা সম্পন্ন ম্যাজিষ্ট্রেটগণকে স্মরণ করে দেয়া হচ্ছে যে, ফৌজদারী কার্যবিধির চতুর্দশ পরিচ্ছেদে উল্লিখিত পদ্ধতি অনুসারেই পুলিশ কর্তৃক পরিচালিত তদন্তকার্য পর্যবেক্ষন করা তাদের দায়িত্ব।
(খ) অ-আমলযোগ্য অপরাধ তদন্তের জন্য পুলিশকে নির্দেশ প্রদানের সময় অধস্তন ম্যাজিষ্ট্রেটগণ যাতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৫ ও ২০২ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতার অপব্যবহার না করেন সেদিকে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট লক্ষ্য রাখবেন। কেবলমাত্র বিশেষ ক্ষেত্রে অনুরূপ নির্দেশ প্রদান করা উচিৎ এবং ম্যাজিষ্ট্রেট যদি সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাপারে তথ্য জানতে চান তবে সমন মঞ্জুরীর জন্য, নৈমিত্তিক প্রথা হিসেবে নয়। কার্যবিধির এ ধরণের অপব্যবহারে অধস্তন পুলিশ সংশয়াপন্ন হবেন না এবং পুলিশ সংক্রান্ত এ সকল ধারার কার্যকারিতার প্রতি লক্ষ্য রাখা পুলিশ সুপারের দায়িত্ব এবং ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক উক্ত ধারা সমূহের অপব্যবহার প্রবনতা পুলিশ সুপার জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের নজরে আনবেন।
আদালত ও ম্যাজিষ্ট্রেটদের প্রতি পুলিশের সম্মান প্রদর্শনঃ (প্রবিধান-৩০, পিআরবি)
সকল আদালত ও ম্যাজিষ্ট্রেটদের প্রতি পুলিশ অফিসারগণ যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন। তারা প্রকাশ্যে তাদের প্রতি কোনো অশোভন মন্তব্য করবেন না এবং প্রকাশ হতে পারে এরূপ কোনো বিভাগীয় প্রতিবেদনে বা অনুরূপ কোনো দলিলে তাদের সমালোচদনা করবেন না। তবে যদি কোনো ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার হয়নি মর্মে কোনো পুলিশ সুপারের বিশ্বাস করবার কারণ থাকে বা পুলিশ অফিসারগণ অন্যায় ব্যবহার পেয়েছে তাহলে তিনি কোর্ট অফিসারের মাধ্যমে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪৩৫ ধারার অধীন লিখিত আনুষ্ঠানিক দরখাস্তের মাধ্যমে, অথবা বেসরকারীভাবে লিখিত নোটের আকারে তিনি বিষয়টি জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের গোচরীভূত করতে পারবেন যার ভাষা অবশ্যই সংযত ও মার্জিত হতে হবে।
৩০ প্রবিধানে উল্লিখিত দরখাস্ত বা রিপোর্ট বা নোট প্রাপ্ত হলে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের তা বিবেচনায় আনা উচিৎ এবং তিনি যা সঠিক বলে মনে করবেন সে রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট কোনো বেসরকারী নোট বা রিপোর্ট পাঠাবেন না (প্রবিধান-৩০ক)।