⚖️ সুরতহাল বা ইনকুয়েস্ট রিপোর্ট কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 2 weeks ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
যে কোনো অস্বাভাবিক এবং সন্দিগ্ধ মৃত্যুর ঘটনার ক্ষেত্রেই ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৪ ধারার বিধান মোতাবেক পুলিশ অফিসার বা ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৭৬ ধারা মোতাবেক কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হইয়া  মৃত লাশের সম্পর্কে যে পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন তৈরি করেন তাহাকে সুরতহাল বা ইনকুয়েস্ট রিপোর্ট বলা হয়। সুরতহাল শব্দটির আভিধানিক অর্থ হইল- সুরত অর্থ চেহারা, হাল অর্থ অবস্থা। পুলিশ অফিসার বা ম্যাজিস্ট্রেট স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিগণের উপস্থিতিতে মৃত ব্যক্তির নিকট আত্মীয়দের সনাক্ত মতে মৃত দেহ ওলট-পালট করাইয়া গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এবং মৃত লাশের উপর কোনো ক্ষত বা জখম, ভাঙ্গা মচকা যাওয়ার দাগ ও অন্যান্য আঘাতের চিহ্ন (যদি থাকে) সঠিকভাবে বর্ণনা করিয়া যে উপায়ে অস্ত্র বা যন্ত্র দ্বারা উক্ত ক্ষত বা চিহ্নের সৃষ্টি হইয়াছে বলিয়া মনে হয়, তাহা বিস্তারিত উল্লেখ করিয়া আপাতদৃষ্টিতে ও প্রাথমিক তদন্তে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে যে প্রতিবেদন বা রিপোর্ট তৈরি করেন, তাহাই সুরতহাল রিপোর্ট। মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতকালে তদন্তকারী অফিসারের তলবমতে কোনো সাক্ষী হাজির না হইলে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১৭৯ ধারা, মিথ্যা জবাব দিলে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১৯৩ ধারা এবং স্বাক্ষর না করিলে বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১৮০ ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারিবেন। 

 

মৃত্য দুই ধরণের। যেমন- 

(১) স্বাভাবিক মৃত্যু, 

(২) অস্বাভাবিক মৃত্যু। 

 

স্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয় না। অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রেই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়। এই মৃত্যু সাধারণত তিনভাবে হইতে পারে। যেমন-

(১) হত্যামূলক,

(২) আত্মহত্যামূলক,

(৩) দুর্ঘটনামূলক। 


দুর্ঘটনামূলক মৃত্য সাধারণত হত্যামূলক হয় না। ব্যতীক্রম ছাড়া। হত্যামূলক এবং আত্মহত্যামূলক মৃত্যু দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করাকালীন যদি দেখা যায় যে মৃতদেহে- 

(১) কোনো জখমের চিহ্ন রহিয়াছে, 

(২) কোনো অংশ ফুলা থাকে,

(৩) হাড় ভাঙ্গা থাকে, 

(৪) গলায় কোনো দাগ বা জখমের চিহ্ন থাকে,

(৫) নাকে, মুখে রক্ত থাকে, 

(৬) মুখ দিয়া লালা বাহির হয়, 

(৭) মুখ মণ্ডলে অস্বাভাবিক ভাব, 

(৮) চোখ বিস্ফোরিত থাকে,

(৯) ফাঁসির ক্ষেত্রে দরিতে একাধিক গিট থাকা এবং গলায় একাধিক গোল দাগ থাকা,

(১০) রক্তক্ষরণের চিহ্ন থাকে,

(১১) হাত, পা বাধার চিহ্ন থাকে,

(১২) জিহবা বাহির হইয়া থাকে ইত্যাদি ধরণ দেখিয়াও বুঝা যাইবে যে, উহা হত্যামূলক বা আত্মহত্যামূলক কিনা। 


এইক্ষেত্রে মৃতদেহ অবশ্যই ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করিতে হইবে এবং পোষ্ট মর্টেম (PM) রিপোর্ট পাওয়ার পর উহার মতামত অনুসারে খুন মামলার/অপমৃত্যু মামলা তদন্তক্রমে নিস্পত্তি করিতে হইবে।