⚖️ গ্যাং কেস কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 1 week ago
- Category: পিআরবি
গ্যাং কেস মূলত কোনো কুখ্যাত সংঘবদ্ধ ও পেশাদার অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকারি অনুমোদনক্রমে পুলিশের সিআইডি কর্তৃক যে মামলা দায়ের করা হয়, তাহাই গ্যাং কেস হিসাবে অভিহিত। পিআরবি ৬২৮ এর বিধানমতে গ্যাং কেসের কার্যপ্রণালী ব্যাখ্যা করা হইয়াছে।
যখন কোনো তথ্য ও রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকারের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, দেশের কোনো বিশেষ এলাকায় কোনো কুখ্যাত অপরাধীদল বা গ্যাং এর সদস্যগণ মারাত্মকভাবে অপরাধ জগতে সক্রিয় আছে এবং তাহারা একের পর এক অপ্রতিরোধ্য হিসাবে নিজ এলাকায়, তার আশেপাশে, থানা এবং জেলার সীমা অতিক্রম করিয়া অপরাধ করিতেছে, তখন সরকার উক্ত গ্যাং তথা গ্যাং এর সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্যাং কেস রুজু করিয়া তদন্তের নির্দেশ দিয়া থাকেন। পিআরবি ১১২৬ এর বিধান মোতাবেক কেবলমাত্র বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি (Criminal Investigation Department) এই মামলা রুজু এবং তদন্তের অধিকারী। স্থানীয় জেলা পুলিশ সুপার সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা ও সমন্বয় সাধন করিয়া থাকেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের প্রশাসনিক এবং জুডিসিয়াল সহায়তারও প্রয়োজন হয়। গ্যাং কেস-এর একটি নাম নির্ধারণ করিতে হয়। সাধরণত মূল সাক্ষী (রাজসাক্ষী) বা দলনেতা বা বিশেষ পরিচিত কোনো সক্রিয় সদস্যের বা গোষ্ঠীর নামে সেই গ্যাং-এর নাম করণ করার বিধান রহিয়াছে (পিআরবি ১১২৭)। যেমন- মনু কারিগর গ্যাং, কেস নং- ক, লালমনিরহাট।
যে সকল অপরাধী দল (গ্যাং) এলাকায় ডাকাতি, রাহাজানি, চুরি, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, অর্থের বিনিময়ে খুন, গবাদী পশু চুরি, নারী ও শিশু পাচার, চোরাচালান ইত্যাদি অপরাধ দলগতভাবে বা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হইয়া একের পর এক করিতে থাকে এবং অনেকে ধৃত হইয়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে এবং সহযোগীদের বিরুদ্ধে তথ্য ও আলামত প্রদান করিয়া থাকে (অনেকেই রাজসাক্ষী হয়), সেই সকল গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে গ্যাং কেস চালু করা হইয়া থাকে। বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪০০ এবং ৪০১ ধারায় এই ধরণের মামলা রুজু করা হইয়া থাকে। সরকারের সিআইডির একজন অভিজ্ঞ পরিদর্শক বা সহকারী পুলিশ সুপার এলাকার সিরিজ অব মামলাসমূহ তদন্ত করিয়া গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে আলামত ও তথ্য সংগ্রহ করিয়া সংশ্লিষ্ট মামলাগুলিতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৭৩ ধারায় চুড়ান্ত পুলিশ রিপোর্ট দাখিল করিয়া প্রাপ্ত তথ্যাদির ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করিবান জন্য বিজ্ঞ পিপি (Public Prosecutor) এর মতামত সহ পুলিশ সুপারের নিকট প্রতিবেদন দাখিল করেন। পুলিশ সুপার তাহার মতামত সহ জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সিআইডির অতিরিক্ত মহা-পুলিশ পরিদর্শকের নিক্ট পাঠাইয়া থাকেন। সিআইডি সেই প্রতিবেদনটির ভিত্তিতে একটি গ্যাং মামলা গঠনের অনুমোদনের জন্য যথারীতি পুলিশের মহা পরিদর্শককে রিপোর্ট দিবে এবং ডিআইজি রেঞ্জকেও অভিহিত করিবে। সরকারী অনুমোদন পাওয়া গেলেই সিআইডির অফিসার নিজে বাদী হইয়া সংশ্লিষ্ট গ্যাং সদস্যদের বিরুদ্ধে দন্ড বিধি আইনের ৪০০/৪০১ ধারায় গ্যাং কেস রুজু করিবেন এবং তদন্তভার গ্রহণ করিবেন।