⚖️ পুলিশের প্রতিরোধমূলক ক্ষমতাগুলি কি কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 3 hours ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি

ফৌজদারী কার্যবিধি আইন মোতাবেক আমলযোগ্য অপরাধ প্রতিরোধ বা নিবারণ কল্পে পুলিশকে বেশকিছু আইনী ক্ষমতা প্রদান করা হইয়াছে, সেইগুলি প্রয়োগ করিয়া পুলিশ অপরাধ প্রতিরোধ করিতে সক্ষম হইতে পারে। যেমন-

 

(১) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৯ ধারাঃ অপরাধ প্রতিরোধ ও দমন করাই পুলিশের মূল কর্তব্য এবং এলাকার শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই পুলিশের দায়িত্ব। এই ধারা অনুযায়ী যে কোনো পুলিশ অফিসার অপরাধ প্রতিরোধের বা নিবারণের লক্ষ্যে তাহার সাধ্যমত পদক্ষেপ গ্রহণ করিয়া কোনো আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটন ঠেকাইতে পারেন। 

 

(২) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫০ ধারাঃ কোনো অধস্তন পুলিশ অফিসার আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে কোনো সংবাদ পাইলে তিনি যাহাতে অপরাধটি সংঘটিত হইতে না পারে সেই লক্ষ্যে তাহার উর্ধতন কর্মকর্তাকে সংবাদটি জানাইবেন, যাহাতে উর্ধতন অফিসার তাহার সাধ্যমত প্রতিরোধমূলিক পদক্ষেপ নিতে পারেন। 

 

(৩) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫১ ধারাঃ কোনো পুলিশ অফিসার যখন দায়ী ব্যক্তিকে গ্রেফতার ব্যতীর কোনো আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটন ঠেকাইতে পারিবেন না বলিয়া প্রতীয়মান হয়, তখন তিনি দায়ী ব্যক্তিকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করিবেন। 

 

(৪) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫২ ধারাঃ সারাদেশেই সরকারী সম্পত্তি তথা জায়গা-জমি, ঘর-বাড়ি, কল-কারখানা ইত্যাদি মালামাল এবং বিভিন্ন স্থাপনা সরকারী চিহ্নসহ রহিয়াছে। কেউ যদি ঐগুলি অপসারণ বা ক্ষতি করে তবে যে কোনো পুলিশ অফিসার তাহা প্রতিরোধ করার অধিকার রাখেন এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেন। 

 

(৫) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৫৩ ধারাঃ কোনো থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) যদি জানিতে পারেন যে, তাহার থানা এলাকায় কোনো স্থানে মিথ্যা বা নকল ওজন ও পরিমাপ যন্ত্র ব্যবহুত হইতেছে বা রক্ষিত আছে, তবে তিনি বিনা পরোয়ানায় উক্ত স্থানে তল্লাশী চালাইয়া যন্ত্রপাতি আটক করিতে পারেন এবং স্থানীয় ম্যাজিষ্ট্রেটকে জানাইবেন। 

 

(৬) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৭ ধারাঃ বাংলাদেশ দণ্ডবিধি আইনের ১৪৩ ধারা মোতাবেক সৃষ্ট কোনো বে-আইনী সমাবেশকে কোনো পুলিশ অফিসার ছত্রভঙ্গ হওয়ার আদেশ দেওয়া সত্বেও যখন ছত্রভঙ্গ না হয়, তখন পুলিশ ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩১ ধারার বিধান মোতাবেক বে-আইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করিতে পারিবেন। 

 

(৮) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৮ ধারাঃ বে-আইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ হওয়ার নির্দেশ পাওয়া সত্বেও ছত্রভঙ্গ না হইলে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৮ ধারার বিধান মোতাবেক পুলিস অফিসার (ওসি) বে-আইনী সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করার জন্য বলপ্রয়োগ করিবেন এবং গ্রেফতার করিতে পারিবেন। প্রয়োজনে গুলিও চালাইতে পারিবেন।  

 

(৯) ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৯ ধারাঃ এইরূপ কোনো সমাবেশ যদি অন্য কোনো উপায়ে ছত্রভঙ্গ করা না যায় এবং জননিরাপত্তার জন্য যদি উহা ছত্রভঙ্গ করা প্রয়োজন বলিয়া বিবেচিত হয়, তাহা হইলে উপস্থিত সর্বোচ্চ ম্যাজিষ্ট্রেট অথবা মহানগর এলাকার পুলিশ করমিশনার সামরিক শক্তি দ্বারা উহা ছত্রভঙ্গ করাইতে পারিবেন। 

 

ইহা ছাড়াও পুলিশ শান্তিভঙ্গ জনিত অপরাধ নিবারণকল্পে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১০৭, ১১৭(গ) ধারা মোতাবেক সদাচরণের মূচলেকার জন্য নন- এফআইআর প্রসিকিউশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে পারেন।