⚖️ জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীর জামিন বাতিলের বিধান কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 1 week ago
- Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
নিম্ন লিখিত কারণে জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামীর জামিন বাতিল করিয়া আদালত পুনরায় আসামীকে গ্রেফতার পূর্বক জেল হাজতে প্রেরণ করিতে পারেন।
(১) যদি কোনো আসামী জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর মামলার যথোপযুক্ত তদন্ত চলাকালে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটায় এবং অভিযোগ সংক্রান্ত কোনো বস্তু বা সূত্র তাহার নিয়ন্ত্রণাধীন থাকায় সে তাহার ঐ রুপ স্থানে তল্লাশী করিতে জোর পূর্বক বাধার সৃষ্টি করে বা উদ্যোগ গ্রহণ করে।
(২) যদি কোনো আসামী আদালত হইতে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সে তাহার জমিনে মুক্ত থাকা অবস্থায় পুনরায় একই প্রকারের বা অন্য কোনো অপরাধ করে তখনই সে তাহার জামিনে মুক্ত থাকার যোগ্যতা হারায়।
(৩) যদি জামিনে মুক্ত আসামী তাহার অভিযোগের সহিত সংশ্লিষ্ট বাদী বা সাক্ষীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অথবা অপরাধ প্রমাণের চিহ্নাদি সরাইয়া ফেলার উদ্যোগ গ্রহণ করে।
(৪) জামিনে মুক্ত আসামী যদি বিদেশে চলিয়া যায় অথবা আত্মগোপন করে অথবা তাহার জামিনদারের নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলিয়া যায়।
(৫) জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী যদি প্রতিরোধমূলকভাবে পুলিশের ও অভিযোগের সাক্ষী এবং ঐ ব্যক্তিদের যাহারা তাহার বিরাগভাজন বা বিরাগের চেষ্টা করিয়াছে তাহাদের বিরুদ্ধে উৎপীড়ণমূলক কর্ম সংঘটন করে এবং বাদীকে তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলিয়া নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে বা প্রতিশোধমূলক কাজ করে। তাহা ছাড়াও হাটে বাজারে বা প্রকাশ্যে বাদী ও সাক্ষীদের চলাচল করার বা স্বাভাবিক ভাবে কাজ কর্ম করার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বা উদ্যোগ গ্রহণ করে।
উপরোক্ত কারণে যে আদালত আসামীর জামিন মঞ্জুর করিয়াছেন সেই আদালতে বা দায়রা জজ আদালতে বা মহামান্য হাইকোর্ট উক্ত আসামীর জামিন বাতিল করিয়া আসামীকে জেল হাজতে প্রেরণের জন্য পুনরায় গ্রেফতার করিবার আদেশ দিতে পারেন (ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ৪৯৭(৫) ধারা)।
যখন কোনো আসামী জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর উল্লিখিত বিষয় সমূহের মধ্যে যে কোনো একটি সংঘটন করে এবং যখন এই বিষয়ে কোনো আদালত হইতে প্রতিবেদন চাওয়া হয় কিংবা বাদী বা সাক্ষী থানায় সংবাদ দেয় তখন বিষয়টি থানার সাধারণ ডায়রীভুক্ত করিয়া ঘটনার বিষয়ে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য তদন্ত করিতে হয়। তদন্তকালে তদন্তকারী অফিসারকে অবশ্যই নিখুঁতভাবে তদন্ত করিতে হইবে যে, আসামী কখন, কোথায়, কি অবস্থায় কাহার সাক্ষাতে কিংবা পরোক্ষভাবে বাদী, সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করিয়াছে , কিংবা উল্লিখিত বিষয়ে যে কোনো পর্যায়ে কিভাবে আচরণ করিয়াছে এবং তাহার অবস্থান সম্পর্কে সঠিকভাবে তদন্ত করিতে হইবে। তাহা ছাড়াও যে সব সাক্ষীরা ঘটনার বিষয়ে চাক্ষুস দেখিয়াছে তাহাদের জবানবন্দি গ্রহণ করিয়া ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৬১ ধারা মোতাবেক লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। এই তদন্ত অত্যন্ত সতর্কতার সহিত করিতে হইবে। কারণ বাদী অনেক সময় মিথ্যার আশ্রয় নিতে এই ধরণের বিষয় আদালতে ও তদন্তকারী অফিসারের নিকট উপস্থাপন করিয়া থাকে এবং বিস্তারিত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করিতে হইবে। প্রতিবেদন দাখিলের সময় অবশ্যই প্রতিবেদনে সাক্ষীদের নাম উল্লেখ করিতে হইবে এবং তদন্তকারী অফিসার কর্তৃক রেকর্ডকৃত জবানবন্দী সংযুক্ত করিতে হইবে। যাহাতে আদালত তদন্তকারী অফিসার এর তদন্ত প্রতিবেদন বিশ্বাস না করিতে পারেন কিংবা আসামীপক্ষ উক্ত প্রতিবেদন বাদীর দ্বারা প্রভান্বিত হইয়া তদন্তকারী অফিসার দাখিল করিয়াছেন আদালত এই ধরণের উক্তি যাহাতে না করিতে পারে।