⚖️ জনশৃংখলা ব্যবস্থা কি?
- Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
- Published: 1 week ago
- Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সবাই এই সমাজে শান্তিতে বসবাস করিতে চায়। উহা তাহাদের স্বীকৃত মানবাধীকার। অনেক সময় কিছু কিছু আইন অমান্যকারী ব্যক্তি, ব্যক্তিস্বার্থে বা দলগত স্বার্থে সমাজের এই শৃংখলা নষ্ট করিয়া থাকে বা সচেষ্ট হয়। সমাজে দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা বেআইনী সমাবেশের মাধ্যমে মানুষের শান্তি নষ্ট করে বা ব্যাহত করে। এই সকল শৃংখলা পরিপন্থি ক্রিয়াকান্ড প্রতিরোধ করার ব্যবস্থাকেই জনশৃংখলা ব্যবস্থা বলা হয়। দন্ডবিধির অষ্টম পরিচ্ছেদে এই সম্পর্কে আলোচনা করা হইয়াছে (ধারা ১৪১-১৬০ দন্ডবিধি)।
নানান কারণে জনশৃংখলা ভঙ্গ হইতে পারে। বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ১৪১ ধারায় এই সম্পর্কে পাঁচটি কারণ উল্লেখ করা হইয়াছে। যেমন-
(১) অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের ভান করিয়া সরকারী কর্চারীকে আইনানুগ ক্ষমতা প্রয়োগে ভয়াভিভুত করা।
(২) কোনো আইন বা আইনানুগ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে বাধা দান করা।
(৩) কোনো দুস্কর্ম বা অপরাধমূলক অনধিকার প্রবেশ বা অন্যবিধ অপরাধ অনুষ্ঠান করা।
(৪) কোনো ব্যক্তির প্রতি অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের ভান করিয়া কোনো সম্পত্তি দখল করা অথবা কোনো ব্যক্তিকে রাস্তার অধিকার বা পানি ব্যবহারের অধিকার বা অন্য কোনো অশরীরি অধিকার হইতে বঞ্চিত করা।
(৫) অপরাধমূলক বলপ্রয়োগ বা অপরাধমূলক বলপ্রয়োগের ভান করিয়া কোনো ব্যক্তিকে যাহা সম্পাদন করিবার জন্য সে আইনতঃ বাধ্য নহে, তাহা করিতে বাধ্য করা বা যাহা সম্পাদন করিবার জন্য তাহার আইনানুগ অধিকার রহিয়াছে তাহা সম্পাদন হইতে তাহাকে বিরত করা।
বাংলাদেশে হরতাল সংবিধান স্বীকৃত একটি গণতান্ত্রিক অধিকার। তাই উহাকে অবৈধ বলা যাইবে না। কিন্তু হরতাল যখন জনগনের উপর চাপাইয়া দেওয়া হয় এবং জোর করিয়া হরতাল পালনে বাধ্য করা হয় তখন উহা আর গণতান্ত্রিক অধিকার থাকে না। উহা বেআইনী কার্যক্রমে পরিণত হয় এবং আইন-শৃংখলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সমাজের বেশীরভাগ মানুষই শান্তিকামী। তাই সমাজে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য পুলিশকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া জনশৃংখলা প্রতিষ্ঠা করিতে হয়। এই প্রসঙ্গে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১২৭, ১২৮, ১২৯, ১৩০, ১৩১, ১৩২ ধারার বিধান সমূহ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করিতে হয়। তাছাড়াও ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৪, ১৪৫, ১৪৯, ১৫১ ধারা মোতাবেক ব্যবস্থা নিতে হয়।