⚖️ বিচার ব্যবস্থার ক্রম বিকাশ কি?

  • Author: MD Sirajul Islam, Inspector of Police
  • Published: 1 week ago
  • Category: ফৌজদারী কার্যবিধি
আদিম সমাজে কোনো বিচার ব্যবস্থা ছিল না। ব্যক্তিগত প্রতিশোধের মাধ্যমে অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করাই ছিলো ক্ষতিগ্রস্থ বা সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির মূলমন্ত্র। সভ্যতার ক্রম বিকাশের সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তি প্রতিশোধের পরিবর্তে ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করতে সম্মত হয়। সমাজপতিরা অপরাধের গুরুত্ব ও প্রকৃতি নির্ণয় করে ক্ষতিপূরণের হার নির্ধারণ করতেন। এ পদ্ধতি অনুসরণ করে প্রাচীনকালে বিচার ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। যুগ যুগ ধরে এ ধরণের সামাজিক বিচার চলতে থাকে। পরবর্তীতে রাষ্ট্রের উৎপত্তি হলে বিচার ব্যবস্থা রাষ্ট্রের অধীনে আনা হয়। 

মনু, বৃহস্পতি, নারদ, গৌতম, বৌদ্ধায়ন, হরিত, বৈশিষ্ট্য, বিষ্ণু, কৌটিলা, কাত্যায়ন প্রমুখ শাস্ত্রকারদের শাস্ত্র হতে প্রাচীনকালের ভারতবর্ষের আইন-আদালত তথা বিচার ব্যবস্থা সমর্কে সম্যক ধারণা লাভ করা যায়। 

প্রাচীনকালে ভারতবর্ষে মনু সংহিতার গুরুত্ব ছিলো সর্বাধিক। ইহা ছিলো ধর্ম ভিত্তিক আইন। অনু সংহিতার অষ্টম অধ্যায়ে অষ্টাদশ আইন শিরোনামে কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ আইনের বর্ণনা আছে। এর মধ্যে ১৮টি আইনের সাথে পরবর্তীতে শাস্ত্রকার বৃহস্পতিসহ আরও অনেকে আরও ১০টি আইনের বিষয় যোগ করেছেন। এ আইনগুলো মানুষের সকল সমস্যা সমাধানের হাতিয়ার হিসেবে পরিণত হয়েছিল বলে কথিত আছে। 

মনু সংহিতায় মৌখিক সাক্ষ্যের উপর অধিক জোর দেয়া হয়েছে। কিন্তু যাক্যবলক লিখিত দালিলিক সাক্ষ্যের উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রমাণের ক্ষেত্রে দালিলিক সাক্ষ্য মৌখিক সাক্ষের চেয়ে অধিকতর গুরুত্ব বহণ করবে মর্মে শাস্ত্রকার কাত্যায়নও মত প্রকাশ করেছেন। 

কৌটিল্য তার শাস্ত্রে উল্লেখ করেছেন যে, রাজা রাজ্যের আইন-শৃংখলা বজায় রাখার জন্য অপরাধীদের বিচারের নিমিত্তে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে আদালত প্রতিষ্ঠা করতেন। সর্বোচ্চ আদালত ছিলো রাজার নিজের দ্বারা পরিচালিত আদালত এবং ইহা রাজধানীতে স্থাপন করা হতো এবং স্থানীয় আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রাজার আদালতে আপীল করার সুযোগ ছিলো। বিচার কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে রাজপ্রসাদ এর আশেপাশেই রাজ্যের সর্বোচ্চ বিচারালয় নির্মাণ করা হতো। রাজা বিচার কার্যের সময় পুরোহিত পন্ডিতদের মতামত গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতেন। 

 

প্রাচীনকালের বিচার ব্যবস্থা বর্তমান কালের মতো প্রতিষ্ঠানিকরূপ লাভ না করলেও বিচার কার্যক্রমে অনেক বিষয়ে মিল পরিলক্ষিত হয়। প্রাচীন বিচার ব্যবস্থায়-

(১) মামলার ফরিয়াদীকেই সাক্ষী উপস্থিত করে মামলা প্রমাণ করতে হতো। 

(২) সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হয়ে ধর্মীয় শপথ বাক্য প্রদান পূর্বক বিরোধীয় বিষয়ের উপর সাক্ষ্য প্রদান করতো। 

(৩) অপরাধীর মোকাবেলায় সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হতো। 

(৪) সাক্ষীকে জেরা করার প্রথা ছিলো।

(৫) সাক্ষীর সাক্ষ্য মূল্যায়নের সময় তার অংগভঙ্গির বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হতো। 

(৬) কতজন সাক্ষী উপস্থিত করতে হবে এ ব্যাপারে কোনো ধরাবাধা নিয়ম ছিলো না। 

(৭) অপরাধী ক্ষমা প্রার্থনা করলে রাজা অপরাধীকে ক্ষমা করে অথবা সামান্য শাস্তি প্রদান করে মুক্ত করে দিতেন। 

          

এ উপমহাদেশের বর্তমান বিচার কার্যক্রমে-

(১) ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ১০১ ধারার মর্ম কথা হলো যে, যিনি বা যে পক্ষ মামলা দায়ের করবেন মামলা প্রমাণের দায়িত্ব তার বা সে পক্ষের উপর বর্তাবে। 

(২) শপথ আইন ১৮৭৩ এর ৫ ধারা অনুযায়ী সাক্ষ্য প্রদানের পূর্বে সকল সাক্ষীকে শপথ গ্রহণ করতে হয়। 

(৩) ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫৩ ধারার বিধান মোতাবেক সাক্ষীদের সাক্ষ্য আসামীর উপস্থিতিতে অথবা তার ব্যক্তিগত উপস্থিতি যখন প্রয়োজন না হয় তখন তার উকিলের উপস্থিতিতে গ্রহণ করতে হবে। 

(৪) সাক্ষ্য আইনের ১৩৮ ধারায় সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণের পর তাকে জেরা করার বিধান বিধৃত হয়েছে। 

(৫) ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৬৩ ধারায় বর্ণিত হয়েছে যে, বিচারক সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের সময় প্রয়োজন মনে করলে উক্ত সাক্ষীর হাবভাব বা আচরণ সম্পর্কে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করবেন। 

(৬) সাক্ষ্য আইনের ১৩৪ ধারায় উল্লেখ আছে যে, কোনো মামলা প্রমাণের জন্য কোনো নির্দিষ্ট সংখ্যক সাক্ষীর সাক্ষ্যের প্রয়োজন নেই, অর্থাৎ আদালত সাক্ষীর গুন বিচার করবেন, সংখ্যা নয়। 

(৭) কোনো ব্যক্তি তার কৃত অপরাধের জন্য দন্ডিত হয়ে থাকলে ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১ ধারার ক্ষমতাবলে সরকার সম্পূর্ণ দন্ড বা দন্ডের অংশবিশেষ মওকুফ করতে পারেন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৫৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যে কোনো দন্ড মওকুফ বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে। 

          

উপরোক্ত বর্ণনা হতে দেখা যায় যে, প্রাচীন ভারতবর্ষের বিচার ব্যবস্থার সাথে বর্তমান বিচার ব্যবস্থার অনেকাংশের মিল আছে। সুতরাং এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় যে, বর্তমানে প্রচলিত ফৌজদারী কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন ইত্যাদি আইন প্রণয়নের সময় প্রাচীন ভারতবর্ষের  প্রচলিত প্রথাকে গুরুত্ব সহকারে অনুসরণ করা হয়েছে। 

          প্রাচীন ভারতবর্ষে হিন্দু সমাজে দন্ড সংক্রান্ত আইন খুব বেশী ত্রুটিপূর্ণ ছিলো। দন্ড বিষয়ক আইন রাজা এবং পুরোহিত শ্রেণীর খামখেয়ালীপনা ও পক্ষপাতিত্বের ফসল ছিলো বিধায় অপরাধের প্রকৃতির সাথে শাস্তি বা দন্ডের সামঞ্জস্য ছিলো না। কিন্তু মৈর্য শাসনামলে দেশের সর্বোত্র অপরাধের গুরুত্ব ও প্রকৃতি বিবেচনা করে শাস্তির সামঞ্জস্যতার বিধান করা হয়। গুপ্ত রাজ বংশের রাজত্বকালে অপরাধের সাধারণ শাস্তি ছিলো অর্থদন্ড। 

          এ উপমহাদেশে মুসলিম রাজত্ব কায়েম হবার পর সুলতানগণ মুসলিম প্রজার জন্য ইসলামী বিচার ব্যবস্থা, হিন্দু প্রজাদের জন্য হিন্দু আইনে পরিচালিত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন। অন্যান্য ধর্মানুসারীদের বিচার কার্যক্রম তাদের স্ব স্ব ধর্মের বিধান দ্বারাই পরিচালিত হতো। প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সুলতান নিজেই পালন করতেন। দরবারের স্বর্ণ নির্মিত উচ্চ সিংহাসনে সুলতান দেহরক্ষী এবং বিচার কার্যে নিয়োজিত অন্যান্য কর্মকর্তাদেরকে নিয়ে আসন গ্রহণ করতেন এবং জনতার সামনে প্রকাশ্যে তিনি মনযোগ সহকারে ফরিয়াদী সহ অন্যান্য সাক্ষীদের বক্তব্য শ্রবণ করতেন। সুলতান সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার নিস্পত্তি করতেন। এ সময়েই ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ হতে সম্পূর্ণ পৃথক করা হয়। শহর গুলোতে কাজী ইসলামী আইন অর্থাৎ পবিত্র কুরআন অনুসরণ করে বিচার কার্য পরিচালনা করতেন।  

          মোঘল শাসনামলে প্রত্যেক সুবায় (প্রদেশে) দেওয়ানী এবং ফৌজদারী আদালত সহ আপীল আদালত ছিলো। বড় বড় মহকুমায় এবং জেলায়ও বিচার কার্যের জন্য আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলো। সম্রাট ফৌজদারী এবং দেওয়ানী উভয় প্রকার মামলার বিচার করতেন। বর্তমান হাইকোর্ট বিভগের মতো এ আদালতের একই সময়ে আদি এবং আপীল আদালতের ক্ষমতা ছিলো। জেলা সদরে কোতোয়াল পুলিশ এবং পৌর কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করতেন। তাছাড়া কোতোয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবেও জেলার সকল ফৌজদারী মামলার অভিযোগ গ্রহণ করতেন এবং তার উপর নির্দিষ্ট কতগুলো অপরাধের বিচারের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিলো। 

          ইংরেজ রাজত্বকালে এ উপমহাদেশের আইন-আদালত তথা বিচার ব্যবস্থার এক অমুল্য পরিবর্তন সাধিত হয়। এ সময়ে বর্তমানে প্রচলিত ফৌজদারী কার্যবিধি, দন্ডবিধি, সাক্ষ্য আইনসহ অনেক আইন প্রনীত হয়। 

          ১৭৬৫ সালে রবার্ট ক্লাইভ মোঘল সম্রাট শাহ আলমের নিকট হতে দেওয়ানী কার্য পরিচালনার অনুমতি পান। তাছাড়া বাংলা, বিহার উড়িষ্যার শাসন কার্য তত্বাবধানের ক্ষমতাও লাভ করেন। ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হোস্টিংস ফৌজদারী বিচারের সুষ্ঠু কার্যক্রম গ্রহণের ব্যবস্থা নেন। তিনি বাংলাকে ১৪টি জেলায় বিভক্ত করে প্রত্যেক জেলায় ফৌজদারী আদালত প্রতিষ্ঠা করেন। কাজী অথবা মুফতি এ সকল আদালতে বিচার করতেন। সদর ফৌজদারী আদালতকে সদর নিজামত আদালত বলা হতো। জেলা ফৌজদারী আদালত হতে সদর নিজামত আদালতে আপীল করার বিধান ছিলো। 

          ১৭৮৬ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশের নির্দেশে ফৌজদারী আপীল জজের নিকট দায়ের করার বিধান হয়। এ সময় ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার সর্বোনিম্নস্তরে ছিলো ম্যাজিষ্ট্রেট এবং ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের উপরেই ছিলো সার্কিট জজ আদালত এবং এ আদালত পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে ঘুরে বিচার করতেন। 

          ১৮২৮ সালে লর্ড ইউলিয়াম বেন্টিক ভারতে আসার পর জজের নিকট হতে ম্যাজিষ্ট্রেসী ক্ষমতা প্রত্যাহার করে কালেক্টরের নিকট অর্পণ করা হয় এবং তখন হতে কালেক্টর একই সাথে ম্যাজিষ্ট্রেট এবং কালেক্টর হিসেবে খ্যাত হন। জজদের শুধু দেওয়ানী বিষয়ের বিচারের ক্ষমতা দেওয়া হয়, তবে দুই মাস অন্তর অন্তর একবার দায়রা জজ হিসেবে গুরুতর এবং অত্যাধিক শাস্তি প্রদান যোগ্য ফৌজদারী মামলার বিচার করতেন। 

          সমগ্র ভারতবর্ষে একই ধরণের বিধি প্রণয়ন করার জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আইনের মাধ্যমে ১৮৩৩ সালে ভারতীয় আইন কমিশন গঠিত হয়। লর্ড মেকলে ছিলেন সেই কমিশনের সভাপতি। ম্যাকলয়েড, এন্ডারসন ও মিল্লেট উক্ত কমিশনের সদস্য ছিলেন। ইংল্যান্ডের আইন, ভারতবর্ষে প্রচলিত বিধি, প্রথা, আইন ইত্যাদি এবং লুসিয়ানা কোড এবং নেপোলিয়ান কোডের উপর ভিত্তি করে সর্বোপ্রথম ভারতবর্ষের জন্য দন্ডবিধি প্রণয়ন করা হয়। ১৮৩৭ সালের ১৪ই অক্টোবর লর্ড মেকলে দন্ডবিধির খসড়া গভর্ণর জেনারেলের নিকট পেশ করেন। দন্ডবিধির খসড়াটি বিথুন এবং স্যার বার্নেস পিকক কর্তৃক পরীক্ষিত হওয়ার পর কিছুটা সংশোধিত আকারে ১৮৬০ সালে আইনে পরিণত হয় এবং ১৮৬২ সালের ১লা জানুয়ারী তারিখে কার্যকরী হয়। 

          দন্ডবিধির খসড়া গভর্ণর জেনারেলের নিকট পেশ করা হলে ১৮৪৭ সালে দন্ডবিধিকে সামনে রেখে একটি ফৌজদারী কার্যবিধির খসড়া প্রণয়নের জন্য কমিশনকে নির্দেশ দেয়া হয় এবং তদনুযায়ী ১৮৫৩ সালে ভারতীয় আইন কমিশন ফৌজদারী কার্যবিধির একটি খসড়া তৈরী করেন এবং তা ১৮৬১ সালে ফৌজদারী কার্যবিধি হিসেবে লেজিসলেটিভ কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত হয়। ফৌজদারী কার্যবিধি হচ্ছে ফৌজদারী বিচার পদ্ধতি সম্পর্কিত আইন। ১৮৭২, ১৮৭৫, ১৮৭৭ এবং ১৮৮২ সালে ফৌজদারী কার্যবিধি পর্যায়ক্রমে সংশোধিত হয়। ফৌজদারী কার্যবিধির এ সকল সংশোধনকে বিবেচনা করে একটি পূর্ণাংগ কার্যবিধি প্রণয়নের জন্য একটি বাছাই কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে তাদের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে ১৮৯৮ সালে পূর্ণাংগ ফৌজদারী কার্যবিধি পাশ হয়। প্রয়োজনের তাগিদে এবং সময়োপযোগী করার জন্য ১৮৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধি ১৯২৩, ১৯৭৮, ১৯৮২, ১৯৯১ ও ২০০৯ সালে সংশোধিত হয়। 

          পাকিস্তান আমলে দায়রা মামলা বিচারের ক্ষেত্রে জুরি প্রথার বিলোপ সাধন করে শুধুমাত্র এসেসর প্রথা চালু রাখা হয়। ১৯৭৮ সালে সংশোধনী দ্বারা দায়রা আদালতে বিচারকালে এসেসর প্রথাও বিলোপ করা হয়। ফৌজদারী কার্যবিধি হচ্ছে ফৌজদারী বিচার পদ্ধতি সম্পর্কিত আইন। এ কার্যবিধি দন্ডবিধিতিতে বর্ণিত সকল অপরাধের তদন্ত, অনুসন্ধান, বিচার এবং অন্যান্য কার্যক্রমের বেলায় প্রযোজ্য। অন্যান্য স্থানীয় ও বিশেষ আইনের বিচার কার্যক্রমের জন্য কোনো পদ্ধতি উল্লেখ না থাকলে এ কার্যবিধিই প্রয়োগ হয়ে থাকে। 

          ১৮৬২ সালে দন্ডবিধি কার্যকরী হওয়ার পর সময়ের এ ব্যপ্ত পরিসরে এ বিধিটি কিছুটা পরিবর্তন সাধন করা হয়েছে। দ্বীপান্তর দন্ড যাবজ্জীবন কারাদন্ডে অর্থাৎ ৩০ (ত্রিশ) বৎসরের কারাদন্ডে রূপান্তরিত হয়েছে। কোনো কোনো অপরাধের শাস্তি বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং কোনো কোনো অপরাধ যা পূর্বে জামিনযোগ্য ছিলো তা বর্তমানে অ-জামিনযোগ্য হিসেবে সংশোধন হয়েছে। 

          ১৮৭২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য আইন বলবৎ হয়। সাক্ষ্য আইন বিচারের সময় বিভিন্ন বিষয়ের উপর বিবেচনার পরিধি কতটুকু বর্জন করতে হবে, কোন কোন শ্রেণীর সাক্ষ্য প্রমাণ সহজযোগ্য, জেরা জবানবন্দীর পদ্ধতি ইত্যাদি নির্দেশ করে বিচারককে শৃংখলার মধ্যে আবদ্ধ করে। অদ্যাবধি সাক্ষ্য আইনের বিশেষ কোনো সংশোধন হয়নি। 

          ১৮৬২ সালের দন্ডবিধিতে অনেক অপরাধের সংজ্ঞা এবং শাস্তির কথা স্থান পায়নি। তাই পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রকার আইন প্রণীত হয়েছে এবং বর্তমানেও হচ্ছে। 

          ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের ৪৬০ টি উপজেলায় উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত স্থাপন করা হয়। কিন্তু ১৯৯৩ সালে সরকার উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত জেলা সদরে স্থানান্তর করেন এবং পরবর্তীতে জেলা সদরে স্থানান্তরিত উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত নামটি রহিত করা হয়। তবে উপকুলীয় উপজেলা সহ মোট ১৫ টি উপজেলায়্ এখনও উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত বর্তমান আছে।           

Google News Google News
Google News এ বিরাট বাজারের সকল পোস্ট পেতে ক্লিক করে ফিডটি ফলো করুন